মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১১:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে ‘কিংস পার্টি’ বলা হচ্ছে কেন? ডিসেম্বরের টাইমলাইন অতিক্রম করতে চায় না নির্বাচন কমিশন: সিইসি ঈদের আগে ‘বড় সুখবর’ পেলেন সরকারি চাকরিজীবীরা পঞ্চগড়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশির মৃত্যু আইন প্রণয়নসহ ১৫ দাবি মাতৃত্বকালীন ছুটি ছয় মাস নিশ্চিতকরণে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিকম্প অনুভূত বিআইএফ এর সভাপতি বি এম ইউসুফ আলীকে এসজএ’র শুভেচ্ছা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের কোনো অবনতি হয়নি : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৪ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ:আবু সাঈদ হত্যা

প্রকাশ্য বাদানুবাদের পর ইউক্রেনে সব ধরনের সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছেন ট্রাম্প!

bornomalanews
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৪ মার্চ, ২০২৫
  • ১৪ Time View

হোয়াইট হাউসে এক উত্তপ্ত বিতর্কের পর যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দেওয়া সামরিক সহায়তা স্থগিত করেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের এই প্রকাশ্য বাদানুবাদ যেন দুই দেশের সম্পর্কের মাঝে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছে। সোমবার (৩ মার্চ) হোয়াইট হাউসের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি নীতিগত পরিবর্তনই নয়, বরং এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক কৌশলের এক গভীর পুনর্মূল্যায়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এই স্থগিতাদেশকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে “কৌশলগত পুনর্বিবেচনা” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে ভাবনা চলছে। “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তির প্রতি তার অঙ্গীকারের কথা স্পষ্ট করেছেন,” বলেছেন ওই কর্মকর্তা। “কিন্তু আমাদের অংশীদারদেরও এই লক্ষ্যে আন্তরিক হতে হবে। আমরা আমাদের সহায়তা থামিয়ে দিচ্ছি এবং পুনর্বিবেচনা করছি, যাতে এটি সংঘাতের সমাধানে প্রকৃত অবদান রাখে।”

ব্লুমবার্গ এবং ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সহায়তা স্থগিতাদেশ কোনো স্থায়ী সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি একটি সাময়িক বিরতি। ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “এটি চিরতরে সহায়তা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নয়। আমরা শুধু সময় নিচ্ছি, যতক্ষণ না ইউক্রেনের নেতারা শান্তির পথে তাদের অঙ্গীকারের সদিচ্ছা দেখাচ্ছেন।”

এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনে পাঠানোর জন্য যেসব সামরিক সরঞ্জাম এখনও পথে রয়েছে, সেগুলো আটকে যাবে। এর মধ্যে রয়েছে উড়োজাহাজ, জাহাজ এবং পোল্যান্ডে মজুদ করা অস্ত্রশস্ত্র। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে এই সাময়িক অস্ত্র সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এই সিদ্ধান্তের পেছনে প্রশাসনের যুক্তি হলো, তারা শান্তির পথে এগোতে চান। কিন্তু এই পদক্ষেপ ইউক্রেনের জন্য এক বিশাল চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতের মাঝে ইউক্রেনের সামরিক প্রস্তুতির জন্য এই সহায়তা অপরিহার্য ছিল। এখন, এই সহায়তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এই সিদ্ধান্তের রাজনৈতিক প্রভাবও ব্যাপক। ইউক্রেনের পাশাপাশি ইউরোপীয় মিত্ররাও এই সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অনেকের মতে, এই সিদ্ধান্ত রাশিয়াকে আরও সাহসী করে তুলতে পারে, যা আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত যেন এক জটিল কূটনৈতিক পাজলের অংশ। একদিকে, তারা শান্তির পথে এগোতে চাইছেন; অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তের ফলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। প্রশ্ন হলো, এই কৌশলগত বিরতি কি আসলেই সংঘাতের সমাধানে সাহায্য করবে, নাকি এটি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে?

এই সিদ্ধান্তের পরিণতি এখনও অনিশ্চিত। তবে একথা নিশ্চিত যে, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন এক বিতর্কের সূচনা করেছে। ইউক্রেন, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র—এই তিন পক্ষের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক এখন অনেকটাই নির্ভর করছে এই সিদ্ধান্তের ফলাফলের ওপর।

শান্তির পথে এগোনোর এই প্রচেষ্টা কি সফল হবে, নাকি এটি নতুন সংঘাতের দিকে ঠেলে দেবে—তা এখন সময়ই বলবে। তবে, এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন যে বার্তা দিয়েছে, তা হলো: শান্তির জন্য সব পক্ষকেই আন্তরিক হতে হবে। আর এই আন্তরিকতা প্রমাণের দায়িত্ব এখন ইউক্রেনের ওপর।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102