বুধবার (৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনা ঘটে। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের উপস্থিতি ঘিরে শুরু হয় প্রতিবাদী স্লোগান, যা পরবর্তীতে মারামারির রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এমবিএর ছাত্র মো. মুশতাক তাহমিদের পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাত লাগে, যা তাকে হাসপাতালে যেতে বাধ্য করে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার পিঠে ১৩টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে আহত মুশতাক তাহমিদ বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর ফটকে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন। সেখানে তিনি ঘটনার দায় কোনো সংগঠনকে না দিয়ে, সরাসরি হামলাকারী ব্যক্তিকে দায়ী করেন। তার সঙ্গে আরও চারজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মুশতাক তাহমিদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমাকে ছুরিকাঘাত করা আহমেদ শাকিল ছাত্রদলের নেতা হতে পারে না, সে সন্ত্রাসী। শাকিলের কাজ তার ব্যক্তিগত দায়, ছাত্রদল এর দায় নিতে পারবে না। আমি মনে করি, ছাত্রদলের কোনও দায় এখানে নেই। ব্যক্তির অপরাধ কখনোই সংগঠনের দায় হতে পারে না। আমি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আহ্বান জানাব, শাকিলের দায় আপনাদের নেয়া উচিত নয়।”
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন, যার মধ্যে আমি কয়েকজনকে চিনতাম। তবে হামলা করেছে আহমেদ শাকিল এবং মাসরুর। শাকিল আমাকে ছুরিকাঘাত করে, আর মাসরুর আমার মাথায় কামড় দেয়। এই ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কেউ ছিল না।”
মুশতাক তাহমিদ আরও জানান, “গতকাল ভাটারা থানায় আমার শুভাকাঙ্ক্ষীরা মামলা করতে গেলে, সেখানে আহমেদ শাকিল উপস্থিত ছিল। সে বলেছিল, তার নামে অনেক মামলা হয়েছে, তাই এতে তার কিছু আসে যায় না। এরপর ভাটারা থানার ওসি আমাদের মামলাটি নেয়নি। থানায় জানানো হয়েছে, ওপর থেকে নির্দেশ আছে, তাই তারা মামলা নিতে পারে না।”
তবে মুশতাক তাহমিদ থেমে থাকেননি। তিনি আরও মন্তব্য করেন, “আমি মনে করি, ছাত্রলীগ এখন না থাকলেও তারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ঢুকে ঝামেলা করার চেষ্টা করছে।”
এই ঘটনায় প্রশাসনকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন মুশতাক তাহমিদ। তার এই ঘোষণা পরিস্থিতির উত্তপ্ততা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চাপ সৃষ্টি করেছে।