ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ, নারীদের প্রতি চলমান সহিংসতা, নির্যাতন এবং ধর্ষণের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনটি রাষ্ট্রের প্রতি তীব্র আহ্বান জানিয়েছে, যেন তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
সম্প্রতি, নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা এবং ধর্ষণের ঘটনা অপ্রতিরোধ্য গতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা জাতির বিবেককে যেন এক রকম নাড়িয়ে দিয়েছে। এ ধরনের বর্বর, নিষ্ঠুর অপরাধ দেশের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক রন্ধ্রে এক অশান্তির জন্ম দিয়েছে। বিশেষত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থীর প্রতি হেনস্তার ঘটনা একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে—এমনকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও নারীরা নিরাপদ নয়। এটি যেন সমাজের মুখে এক বিশাল চপেটাঘাত, এক সতর্ক সংকেত যা আমাদের অস্বস্তিতে ফেলেছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে নয়, এটি পুরো জাতির সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি মারাত্মক হুমকি। রাষ্ট্রের একমাত্র দায়িত্ব হল নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যেন দেশের প্রতিটি মানুষ নিজেকে নিরাপদ মনে করে চলতে পারে। অতএব, সরকারের কাছে একটি জরুরি দাবি—অপরাধীদের শাস্তির আওতায় এনে, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং এক নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠা করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এই ঘটনায় সাধারণ জনগণের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমের প্রতিটি কোণে প্রতিবাদের আগুন জ্বলে উঠেছে, নারীরা বিক্ষোভে ও সমাবেশে শামিল হচ্ছেন। তাদের এই প্রতিবাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে দেশের নাট্য নির্মাতারা। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তারা এক প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করেন। এই কর্মসূচির নেতৃত্বে ছিল ডিরেক্টরস গিল্ড বাংলাদেশ, এবং সেখানে উপস্থিত ছিলেন খ্যাতনামা নাট্য নির্মাতারা, যেমন শহীদুজ্জামান সেলিম, প্রীতি দত্ত, জিয়াউদ্দিন আলম, চয়নিকা চৌধুরী এবং আরও অনেকেই।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নির্মাতারা একযোগে দাবি জানিয়েছেন, “নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। দোষীদের বিরুদ্ধে যদি কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে সমাজে এই ধরনের অপরাধ আরও ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পাবে।”
এই প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে নাট্য নির্মাতারা সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে একটি আহ্বান জানিয়েছেন—“নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে আমাদের সবাইকে একত্রিত হতে হবে। সবাই মিলে এই অপরাধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, একটি নিরাপদ সমাজ গড়ার পথে এগিয়ে আসতে হবে।”