এতদিন ধরে দেশের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে নানান বিশৃঙ্খলা আর মতবিরোধের মধ্য দিয়ে চলতে থাকা দলগুলোর মধ্যে এক নতুন সূচনা ঘটেছে। সাবেক সামরিক কর্মকর্তা, সরকারি আমলা, এনজিও কর্মী এবং নানা রাজনৈতিক দলের নেতাদের সমন্বয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে এক নতুন রাজনৈতিক দল। তাদের স্লোগান? ‘ইনসাফ জিন্দাবাদ’। আর তাদের নাম? ‘জনতার দল’। এই নতুন দলটি বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে তাদের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছে। এবং, দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল।
বিকেল সাড়ে তিনটায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠান শুরু হয়, যা একদিকে যেমন শান্তির বার্তা বহন করে, তেমনি দলের শক্তিশালী ভিত্তির পরিচয় দেয়। এরপর, জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে আহতদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের গম্ভীরতা আরও গভীর হয়। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এনজিও প্রতিনিধি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখা হয়, যেন এক একটি শব্দে দেশের প্রতি অগাধ ভালোবাসা এবং প্রতিবাদিত শক্তির এক স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবিম্ব ঘটে।
‘জনতার দল’-এর আত্মপ্রকাশের পর, এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, এবং উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। উপস্থিত ছিলেন, আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টির) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, সাবেক মন্ত্রী নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজ উদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাজনীতিবিদ আজম খান, মেজর জেনারেল (অব.) ফজল ইবনে শারেখুজ্জামান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সাব্বির আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) ইসমাইল ফারুক চৌধুরী, এবং সাবেক ছাত্রনেতা মাস্তুক হাসান জয়সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
এই সমাবেশে দলের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল তার বক্তব্যে বলেন, “আমাদের রাজনৈতিক দর্শন হলো ফিলিস্তিন। ফিলিস্তিনে নেতা তৈরি হতে দুই ঘণ্টাও সময় লাগে না। আমরা ঐতিহাসিকভাবে মীমাংসিত বিষয় নিয়ে অহেতুক তর্কে জড়াতে চাই না।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সৎ, সাহসী, শিক্ষিত, দেশপ্রেমিক এবং নিষ্ঠাবান মানুষের সঙ্গে এগিয়ে যেতে চাই। এর জন্য যদি আমাদের ১০ জন লোকও থাকে, তবে তাদের নিয়েই আমরা এগোতে প্রস্তুত। আমরা দেখেছি, বাংলাদেশের পূর্ববর্তী রাজনৈতিক দলগুলো তাদের সময় শেষ হওয়ার আগেই পালিয়ে গেছে। আমাদের দলীয় অ্যাকাউন্ট সব্বাইকে প্রকাশ্যে দেখাতে প্রস্তুত। আমরা যে পথে চলব, তা সকল রাজনৈতিক দলের স্রোতের বিপরীতে হবে।”
এই নতুন দলটির আগমন যেন দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটে এক নতুন দিগন্তের সূচনা, যেখানে তারা আগের পথ থেকে বেরিয়ে গিয়ে নতুন পথের সন্ধান করতে চায়।