চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১৪৪ ধারা ভেঙে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সমর্থিত বিএনপির নেতাকর্মীরা। বুধবার, ২৬ মার্চ, দুপুর ১২টায়, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী নিজাম উদ্দিনের নেতৃত্বে সহস্রাধিক নেতাকর্মী ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় তাদের স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পরিবেশ, এবং মিছিলের মাধ্যমে তারা উপজেলা সদর ত্যাগ করেন।
গাজী নিজাম উদ্দিন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ১৪৪ ধারা ভেঙে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছি। আজকের পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ; প্রশাসন কেন এমন পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়।”
অন্যদিকে, মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহফুজা জেরিন জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু দুপুর ১২টায় বিএনপির একটি গ্রুপ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে প্রবেশ করে। তিনি বলেন, “মিছিলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এর আগে, ২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের কর্মসূচির জন্য উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এই আদেশে বলা হয়, উল্লেখিত এলাকায় কোনো ধরনের সভা, সমাবেশ, মিছিল, গণজমায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র, দেশীয় অস্ত্র বহনসহ একত্রে ৫ জন বা তার বেশি লোকজন চলাচল নিষিদ্ধ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়া, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে জনসাধারণ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল শ্রদ্ধা নিবেদন করবে, এমনকি বিএনপির নবগঠিত ইউনিটের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ২৪ মার্চ থেকে এই উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে, যা যে কোনো সময় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে।
মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, সন্ধ্যায় মিরসরাই উপজেলা বিএনপির দুটি পক্ষ কর্মসূচি ঘোষণা করে। নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে বুধবার সকাল ১০টায় এবং পদবঞ্চিত নেতারা সকাল ৯টায় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ঘোষণা দেন।
প্রসঙ্গত, ২৩ মার্চ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার মিরসরাই উপজেলা, পৌরসভা ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। ঘোষণার পর পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল ও হামলা-ভাঙচুর চালান। ২৪ মার্চ, কমিটি বাতিলের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ, ঝাড়ু মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উত্তেজনার একটি নতুন অধ্যায় রচনা করছে, যেখানে প্রতিটি পদক্ষেপের ফলাফল হতে পারে অপ্রত্যাশিত।