দল ও দেশের জনগণের স্বার্থে আঘাত এলে, প্রয়োজনে বিএনপি আবারও মাঠে নামবে—এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ১০০ ফিটের বেরাইদ এলাকায় দুস্থদের মধ্যে ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে, কোনোভাবে কোনো চক্রান্ত সফল হতে দেওয়া হবে না।” তিনি আরও যোগ করেন, “ফ্রান্স, লন্ডন, আমেরিকা থেকে কেউ যদি দেশের মানুষকে উত্তেজিত করার চেষ্টা করেন, তবে তা রুখে দেওয়া হবে। দেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ মেনে নেওয়া হবে না।”
বিএনপি মহাসচিব স্পষ্ট করে বলেন, “বিএনপি ভারতের পক্ষেও নয়, পাকিস্তানের পক্ষেও নয়। আমেরিকার পক্ষেও নয়, ইংল্যান্ডের পক্ষেও নয়। বিএনপি বাংলাদেশের পক্ষে।”
ভারতের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “১৭ বছর লড়াই সংগ্রাম হলো, সুখী সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ার জন্য এই লড়াই। কিন্তু কেউ কেউ এটাকে ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছে, বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে, কিন্তু তা হতে দেওয়া যাবে না। আমরা তিস্তা নদীর পাড়ে গিয়ে প্রতিবাদ করেছি।”
তিনি দাবি করেন, “বিএনপি সব পরিবর্তন এনেছে, সংস্কার বিএনপি করেছে। একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাতিল করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাও বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে।”
এ সময় গত ১৭ বছরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করেন তিনি। “এত নির্যাতন, এত মামলা, গুম, খুন, সহ্য করেছে বিএনপি। বিএনপি করে এমন মানুষ নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে ৯৯ শতাংশ। কিন্তু একদিন হঠাৎ করে হাসিনাকে আল্লাহ গুম করে দিলেন, মানুষ শান্তি পেল। ডাইনির হাত থেকে আল্লাহ দেশের মানুষকে রক্ষা করেছেন। নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।”
ছাত্র-জনতার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ভয়াবহ দানবের থেকে দেশ মুক্তি পেয়েছে উল্লেখ করে দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, “ড. ইউনূসকে দেশের মানুষ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বানিয়েছে, স্বল্প সময়ের মধ্যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে নির্বাচন দেওয়ার জন্য। সমস্ত সংগ্রাম হয়েছে নির্বাচনের জন্য, তাইতো বিএনপি নির্বাচনের কথাই বলে। তবে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই সরকার ক্ষমতায় বসে থাকবে, জনপ্রতিনিধিত্বে কেউ থাকবে না—এমনটা মেনে নেওয়া যাবে না।”
এভাবে, বিএনপির নেতৃবৃন্দের বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য তাদের দৃঢ় সংকল্পের প্রতিফলন ঘটেছে।