দেশবাসীকে ঈদুল ফিতরের উষ্ণ শুভেচ্ছা জানিয়ে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “সতেরো বছর ধরে বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণ প্রার্থনা করেছিল যে তারা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবে।”
রোববার (৩০ মার্চ), লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমান এক অভিনন্দন বার্তায় এই কথা বলেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশের জনগণ এবং সারা বিশ্বে ঈদ উদযাপনকারী মুসলমানদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
তিনি আরও বলেন, “সতেরো বছর ধরে বাংলাদেশের নির্যাতিত জনগণ প্রার্থনা করেছিল যে তারা একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপন করতে পারবে, যেখানে স্বৈরাচারী সরকার তাদের কণ্ঠরোধ করতে পারেনি। ২০২৪ সালে সেই প্রার্থনার ফল পেয়েছেন তারা। এক ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে, যেখানে দুই হাজারেরও বেশি প্রাণের বিনিময়ে, বাংলাদেশ আজ স্বৈরাচারীর শৃঙ্খল থেকে মুক্ত।”
“প্রায় দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো, এই ঈদে আমরা স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত একটি দেশে পবিত্র রমজান মাসের পর এই বরকতময় দিনটি উদযাপন করছি। এ জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি এই অভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গকারী শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি এবং শহীদ ও আহতদের জন্য প্রার্থনা করছি।”
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, “সর্বজনীন এই ঐক্যের মাধ্যমে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতা-কর্মীসহ সব বাংলাদেশিকে আহ্বান জানাচ্ছি, স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আমাদের প্রথম ঈদের আনন্দ যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিন।”
তিনি আরও বলেন, “যাদের সামর্থ্য আছে, তাদের প্রতি আহ্বান, আপনারা সব সম্প্রদায়ের মানুষের খোঁজ নিন; দেশের নারী-পুরুষ সবার প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন; এতিমখানায় থাকা শিশুদের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে খান; প্রাণ উৎসর্গকারী তরুণরা, যারা আজ পরিবারে অনুপস্থিত, তাদের বাড়িতে ঈদ উদযাপনে অংশ নিন; দরিদ্রদের পাশে দাঁড়ান, যাতে অর্থনৈতিক দুর্দশা তাদের আনন্দঘন মুহূর্ত কেড়ে না নেয়।”
পরিবহন মালিকদের উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছে আবেদন করছি যে অতিরিক্ত ভাড়া আরোপ করা থেকে বিরত থাকুন, যাতে ঘরমুখী মানুষ কোনো রকম হয়রানি ছাড়া তাদের পরিবারের কাছে যেতে পারে এবং ঈদ উদযাপনে মিলিত হতে পারে।”
সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “আমরা যখন একটি উৎসব করতে যাচ্ছি, তখনো পরাজিত শক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য মরিয়া। আমি সব নাগরিককে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। যারা এই কষ্টার্জিত ফসলকে ব্যাহত করতে চায়, তারা যেন কোনো এজেন্ডা কাজে লাগাতে না পারে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে দাঁড়াতে ব্যর্থ হই, তাহলে এই শক্তিগুলো আমাদের ঐতিহাসিক বিজয়কে নষ্ট করে দেবে, যা আমাদের জন্য ঝুঁকির।”
“পরিশেষে বলব, আমি দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ঈদের সময় আরও সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি এবং যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনসাধারণের জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি করতে চায়, তাদের প্রতিহত করুন।”
তারেক রহমান বলেন, “স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম ঈদ হোক সবার জন্য শান্তি, ঐক্য ও আনন্দের। আমি আল্লাহর কাছে এই আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।”