জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দি ইকোনমিস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তিনি এ তথ্য জানান। তবে তিনি নিশ্চিত করেননি যে, তিনি নিজে এই নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না। ড. ইউনূস বলেন, আগামী জুনের পরে নির্বাচন হবে না। তিনি আরও জানান, অন্তর্বর্তী সরকার মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যাংক খাতকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে। তবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখনো দুর্বল এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভঙ্গুর রয়ে গেছে। বিপ্লবের নয় মাস পরও কাঙ্ক্ষিত বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব হয়নি বলে তিনি স্বীকার করেন। ড. ইউনূস উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে, যা নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথ সুগম করবে এবং একটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনে সহায়তা করবে। তবে তিনি স্বীকার করেন, ঐক্যে পৌঁছানো সহজ কাজ নয়। তিনি বলেন, কোন কোন কমিশন থাকা উচিত, তা নিয়ে রাজনৈতিক দল ও জনগণের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, দেশের অর্থনীতির মূলভিত্তি তৈরি পোশাক খাত নিয়ে একটি কমিশন থাকা উচিত ছিল। আবার অনেকের অভিযোগ, শিক্ষাখাতকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। সবচেয়ে বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে নারী সংস্কার কমিশন। এই কমিশন ইসলামী উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে, যাতে নারীদের অধিক অধিকার দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের ফলে ইসলামপন্থি দলগুলো বিক্ষোভ শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ১২ মে নির্বাচন কমিশন দলটির নিবন্ধন স্থগিত করেছে। ফলে দলটি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। ড. ইউনূসের এই বক্তব্য এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।