সিলেটের হযরত শাহপরান (রহ.) মাজারে ওরসকে কেন্দ্র করে গান-বাজনাসহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকাণ্ড বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে মাজার কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) থেকে ওরসের নামে গান-বাজনা সম্পূর্ণ নিষেধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাজারের খাদিম সৈয়দ কাবুল আহমদ।
তিনি বলেন, মাজারে ওরস উপলক্ষ্যে গান-বাজনা সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করা হলো। কেউ বাদ্যযন্ত্র নিয়ে আসবেন না। এখানে প্রতি বৃহস্পতিবার যে গান-বাজনা করা হয় সেটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেখা গেছে গান বাজনার আড়ালে এইখানে মাদকের ব্যবসা করা হয়। যা আমরা খাদিম পরিবার কোনো ভাবে সমর্থন করি না। এগুলোর তীব্র নিন্দা জানাই। কেউ যদি করার চেষ্টা করেন তাহলে আমরা তা প্রতিহত করব।
মাজার সূত্রে জানা যায়, প্রতি বছর নিয়ম অনুযায়ী রবিউল আউয়াল মাসের ৪, ৫, ৬ তারিখে তিনদিন ব্যাপী ওরসের আয়োজন করে থাকে মাজার কর্তৃপক্ষ।
কর্মসূচির মধ্যে প্রথম দিন খতমে কোরআন, দোয়া ও জিকির এবং মিলাদ মাহফিল। দ্বিতীয় দিন গিলাফ চড়ানো, গরু জবেহ, সারারাত জিকির ও মিলাদ মাহফিল এবং ভোর ৪ টায় ফাতেহা পাঠ। শেষ দিন বাদ ফজর আখেরি মোনাজাতের পর নেওয়াজ বিতরণ করা হয়।
ওরস চলাকালে মাজার কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট কর্মসূচির বাইরে ভক্ত আশেকানরা প্যান্ডেল করে নাচ-গান-মদ-জুয়া, গাজা, অশ্লীলতা, নারী নৃত্যসহ বিভিন্ন অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। এছাড়া মেলার নামে জুয়ার রমরমা আসর বসানো হয় ওরসের সময়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজার হাজার ভক্ত আশেকান ইবাদত বন্দেগি ছেড়ে এই সকল আসরে সময় কাটান।
বিষয়টি নিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশেনের ৩৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেলোয়ার হোসেন বলেন, মাজারে গান-বাজনা ও অশ্লীলতা বন্ধের বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠক করেছি। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে শাহপরান মাজারে গান-বাজনা, মাদক সেবনসহ সকল প্রকার অশ্লীল কার্যক্রম এখন থেকে বন্ধ থাকবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সহযোগিতা করবে। বিষয়টি তদারকি করার জন্য মুসল্লি, ছাত্র-জনতা ও আলেমদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) বাদ জুম্মা এসব অসামাজিক-অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেন ছাত্র জনতা, উলামা মাশায়েখ ও সর্বস্তরের মুসল্লিরা।