রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, “কেবল একটি নির্বাচিত সরকার দেশের গতিপথ নির্ধারণ করবে; এমন প্রশাসন নয়, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয় বা জবাবদিহি করতে ইচ্ছুক নয়।” বুধবার সেনানিবাসে দেওয়া এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা। তাদের মতে, দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে সেনাপ্রধানের এই বক্তব্য রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা জানান, প্রধান উপদেষ্টা আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছেন, যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিশেষ করে র্যাব, ডিজিএফআই, এনএসআই- সবাই অপকর্মে জড়িত নয়, তবে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। সেনাপ্রধানের বক্তব্যের পর রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আশাবাদ দেখা দিয়েছে। তারা মনে করেন, সেনাপ্রধানের বক্তব্য দেশের সার্বিক চিত্র তুলে ধরেছে এবং দেশের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, সংকটময় মুহূর্তে সেনাপ্রধান জাতিকে আশ্বস্ত করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, এই সামরিক বাহিনী দেশে দ্রুতসময়ে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, যা দেশের সব সমস্যার সমাধান করবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছেন, যা সংকট উত্তরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দুর্বল রাজনীতির কারণেই সেনাপ্রধান এমন বক্তব্য রেখেছেন। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সেনাপ্রধানের বক্তব্য পজিটিভ, তবে সরকারের প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সেনাপ্রধানের বক্তব্য রাজনৈতিক দল ও জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল। সেনাবাহিনী দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার হিসেবে তাদের বক্তব্য রাখতে পারে, তবে রাজনীতির ক্ষেত্রে তাদের একক বক্তব্য থাকা উচিত নয়, এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত যে টাইমলাইন ঘোষণা করেছেন, সেটিকে সমর্থন করেছেন, তবে বিচার ও সংস্কারের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেছেন। সার্বিকভাবে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, যা আগামী নির্বাচনের জন্য আশাবাদী করে তুলেছে রাজনৈতিক দলগুলো এবং সাধারণ জনগণকে।