তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আগামী দিনে পাকিস্তান ভ্রমণ করবেন, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শনিবার তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এই ধরনের পদক্ষেপ প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা হ্রাসের ইঙ্গিত দেয়, কারণ তালেবান কর্তৃপক্ষ এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে বেশ টানাপোড়েনের মধ্যে ছিল। নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং হাজার হাজার আফগানকে বহিষ্কারের জন্য ইসলামাবাদের অভিযানের কারণে সম্পর্ক শীতল হয়ে উঠেছিল।শুক্রবার পাকিস্তানের শীর্ষ কূটনীতিক জানিয়েছেন, কাবুলে নিযুক্ত চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে রাষ্ট্রদূত পদে উন্নীত করা হবে। এর পর কাবুলও ইসলামাবাদে তার প্রতিনিধিকে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে-এক পোস্টে বলেছে, আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্বের এই উন্নয়ন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে। আফগান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়া আহমেদ তাকাল এএফপি’কে জানিয়েছেন, কাবুলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে’ পাকিস্তান সফর করবেন। মুত্তাকি চলতি মাসে বেইজিংয়ে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন, যেখানে তারা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। পরে ওয়াং কাবুল ও ইসলামাবাদের রাষ্ট্রদূত বিনিময়ের ইচ্ছার কথা ঘোষণা করেন এবং আফগানিস্তান-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শুক্রবার পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কের ‘ইতিবাচক গতিপথ’-এর প্রশংসা করে বলেছেন, তাদের প্রতিনিধিদের উন্নীতকরণ ‘দুটি ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের মধ্যে আরো বিনিময়কে উৎসাহিত করবে।’ ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে চীনসহ মাত্র কয়েকটি দেশ তাদের রাষ্ট্রদূতদের আতিথেয়তা দিতে সম্মত হয়েছে, তবে এখনো কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান প্রশাসনকে স্বীকৃতি দেয়নি। গত মাসে রাশিয়া বলেছিল, গোষ্ঠীটির ‘সন্ত্রাসী’ তকমা অপসারণের কয়েকদিন পর তারা তালেবান সরকারের একজন রাষ্ট্রদূতকেও স্বীকৃতি দেবে। এই পরিস্থিতি আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা তৈরি করছে, যা দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতার ভিত্তি স্থাপন করতে সহায়তা করবে।