আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে বিএনপির পক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি সহযোগিতা অব্যাহত রাখা কঠিন হয়ে যাবে। বিএনপি নেতার মতে, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তিনি উল্লেখ করেন, “জুলাই গণ অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে মানুষের হারানো অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য শিগগিরই একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।” এ সময় বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও মাহফুজ আলমের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানায়। খন্দকার মোশাররফ বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা রক্ষার জন্য উপদেষ্টাদের অব্যাহতি দিতে হবে।” তিনি আরও বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার বক্তব্য নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে, তাই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে তাকেও অব্যাহতি দেওয়া উচিত। বিএনপি নেতার বক্তব্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদী আওয়ামী দুঃশাসনের পতন হয়েছে, কিন্তু গত সাড়ে ৯ মাসে জনগণের প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হয়েছে, তা একটি বড় প্রশ্ন।” তিনি উল্লেখ করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের একমাত্র ম্যান্ডেট হচ্ছে একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা। এছাড়া, বিএনপি সরকারের বিভিন্ন বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডে জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে। তারা দাবি করেছে, দেশের নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর বিষয়গুলো সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত, যাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। বিএনপি নেতারা আশা প্রকাশ করেছেন যে, সরকার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ গ্রহণ করানোর ব্যবস্থা করবে, যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্বিকভাবে, বিএনপির এই দাবি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।