বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই বক্তব্য দেন। তারেক রহমানের ভাষণে উঠে আসে ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় এবং জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান। তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের অতীত অভিজ্ঞতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে তিন মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে এই ধরনের নির্বাচন দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছিল এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। কিন্তু বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেনি, যা জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করছে। তিনি মনে করেন, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব এবং এর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃশ্যমান ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। তারেক রহমান আরও বলেন, গত দেড় দশকে ভোটার তালিকায় প্রায় সাড়ে তিন কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে, যারা এখনও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাননি। তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ এবং জনগণের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করে ক্ষমতায় টিকে আছে। তার ভাষায়, “পতিত, পরাজিত, পলাতক স্বৈরাচারের কাছে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা কিংবা নির্বাচন কোনও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না।” তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণই বিএনপির ক্ষমতার মূল উৎস। ক্ষমতায় না থাকলেও বিএনপি সবসময় জনগণের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিএনপি নির্বাচিত হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ করবে। তারেক রহমানের মতে, দেশের বিশাল জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করা গেলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। তারেক রহমানের বক্তব্যে উঠে আসে একটি নির্বাচনী সরকারের প্রয়োজনীয়তার কথা। তিনি বলেন, বিএনপি শুরু থেকেই সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে এবং এখন আর শুধু কথা বলার সময় নয়, বরং বাস্তবায়ন ও দৃষ্টান্ত স্থাপনের সময়। তরুণ প্রজন্মের প্রতি আস্থা রেখে তিনি বলেন, তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণই দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তারেক রহমানের এই বক্তব্যে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানো সরকারের প্রতি তার প্রত্যাশা। ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানিয়ে তিনি দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।