বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার (২১ জুন) বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, রোববার (২২ জুন) সকালে শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করতে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল যাবে। বিএনপির অভিযোগ, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা বিতর্কিত ছিল। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি ছিল বিশেষভাবে বিতর্কিত, যেখানে বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেনি। ওই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হন, যা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। বিএনপি অভিযোগ করে যে, ওই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে কেবল “কুকুর” দেখা গেছে, মানুষের উপস্থিতি ছিল না। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও বিএনপির অভিযোগ ছিল যে, ভোটের দিন রাতেই ভোট প্রদান করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দলও নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে। বিএনপি দাবি করে যে, নির্বাচনের দিন জামায়াতের প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। বর্তমানে বিএনপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি এবং এই নির্বাচনকে “আমি তুমি আর ডামি নির্বাচন” বলে অভিহিত করেছে। বিএনপির অভিযোগ, আগের নির্বাচন কমিশনগুলো তাদের অনুরোধ সত্ত্বেও ভোটের আয়োজন করেছে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও সেনা মোতায়েনের দাবি উপেক্ষা করেছে। এদিকে, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস গত ১৬ জুন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের ভূমিকা তদন্তে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। বিএনপি এবার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা সিইসিসহ অন্যান্য কমিশনারদের বিরুদ্ধে মামলা করার মাধ্যমে তাদের অভিযোগের প্রতিকার চাচ্ছে। এখন দেখার বিষয় হবে, বিএনপির এই পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে পারে কিনা এবং আগামী নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় এর প্রভাব কেমন হবে।