২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে সংঘটিত ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২৪ বছর পর আরও তিনজন ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। নিউইয়র্কের মেডিকেল এক্সামিনার অফিস ৭ আগস্ট জানিয়েছে, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এই তিনজনের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে, যারা সবাই আমেরিকান নাগরিক এবং তাদের মধ্যে দু’জন ছিলেন মহিলা। এর মধ্যে দু’জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে: লং আইল্যান্ডের রায়ান ফিটজারেল্ড (২৬), যিনি ফিড্যুসিয়ারি ট্রাস্টের ফরেন কারেন্সি ব্যবসায়ী ছিলেন, এবং পাম স্প্রিংয়ের বারবারা কীটিং (৭২), যিনি ছিনতাইকৃত আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের যাত্রী ছিলেন। তৃতীয় ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এই শনাক্তকরণের ফলে ১৯ জন আত্মঘাতী সন্ত্রাসীসহ ওই হামলায় নিহতের সংখ্যা এখন দাঁড়িয়েছে ২৯৯৯। নিউইয়র্কের মেডিকেল এক্সামিনার অফিস জানিয়েছে, এখনও প্রায় ১১০০ ভিকটিমের দেহাবশেষ শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এই দেহাবশেষ নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে গবেষণা চলছে। চীফ মেডিকেল এক্সামিনার জ্যাসন গ্রাহাম এ প্রসঙ্গে বলেন, “সময় যতই দীর্ঘ হোক না কেন, ভিকটিমদের দেহাবশেষ সঠিকভাবে শনাক্ত করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। এটি আমাদের গবেষণার অঙ্গীকার।” নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক এডামস এই শনাক্তকরণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “দুই দশকেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও স্বজন হারানোর বেদনা এখনও কমেনি। অবশিষ্ট দেহাবশেষ শনাক্ত করতে পারলে আমরা সেই দুঃসহ বেদনা কিছুটা লাঘব করতে পারব।” ৯/১১ হামলায় নিহতদের তালিকায় ৫৮টি দেশের নাগরিক রয়েছেন, যার মধ্যে ৬ জন বাংলাদেশি, ৪১ জন ভারতীয়, ৮ জন পাকিস্তানি এবং ২৬২৪ জন আমেরিকান অন্তর্ভুক্ত। এই হামলার পর থেকে নিউইয়র্কের মেডিকেল এক্সামিনার অফিস দীর্ঘমেয়াদী পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমে ভিকটিমদের শনাক্তকরণে কাজ করে যাচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শুধু বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, বরং নিহতদের পরিবারের মানসিক শান্তি ও ন্যায়বিচারের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই শনাক্তকরণ কার্যক্রম ৯/১১ হামলার ট্র্যাজেডির স্মৃতিকে নতুন করে সামনে এনেছে। এটি কেবল পরিবারগুলোর জন্য সান্ত্বনা নয়, বরং ইতিহাসের এই কালো অধ্যায়ের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রতীক।