জামায়াত নেতার অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড় এলাকায় আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এই দাবি করেন। ডা. তাহের অভিযোগ করেন, একটি দলের লোকদের গুরুত্বপূর্ণ সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের পদে বসিয়ে পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনে নীলনকশা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এতে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা ও চলমান ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। তাহের বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ পদে নিরপেক্ষ ও সৎ ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। তা না হলে, ষড়যন্ত্রে যুক্ত উপদেষ্টাদের নাম ও কল রেকর্ড আমাদের কাছে আছে—প্রয়োজনে তা প্রকাশ করব।” তিনি আরও বলেন, “তারা মিটিংয়ে কী বলেছেন, সেই তথ্যও আমাদের কাছে রয়েছে। এখনই জনসমক্ষে প্রকাশ করছি না, সংশোধনের সুযোগ দিচ্ছি। তবে সতর্ক না হলে, সময়মতো নাম প্রকাশ করা হবে।” নির্বাচনের নিরপেক্ষ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকার ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান জামায়াতের এই নেতা। সাম্প্রতিক এক সচিব নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি জানান, “গত পরশু একজন সচিব নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে একজন সৎ, যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু দলীয় আনুগত্য ও অতীতের দুর্নীতির অভিযোগ থাকা একজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, সরকারের কিছু উপদেষ্টা আশ্বস্ত করেছিলেন নিরপেক্ষ নিয়োগের ব্যাপারে, কিন্তু পরবর্তীতে তারা সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি। তাহের আরও বলেন, “সরকারের চার-পাঁচজন উপদেষ্টা একটি বিশেষ দলের পক্ষে সব নিয়োগ নিয়ন্ত্রণ করছেন। এতে করে দেশ আবার দলীয় সরকারের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।” পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সেখান থেকেও একই ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে যে, নির্দিষ্ট দলের লোকেরা চাপে নিয়োগ পাচ্ছেন। নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে তাহের বলেন, “গণভোট এখন সবার ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত। তবে কিছু পক্ষ এখানে জটিলতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে—তারা বলছে, গণভোট ও জাতীয় ভোট একসঙ্গে হবে।” এ সময় মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন এবং ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি রেজাউল করিম সভা পরিচালনা করেন। বক্তব্য দেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাসুম, এহসানুল মাহবুব জোবাব্য, আবদুল হালিমসহ আরও অনেকে। জামায়াত নেতার এই বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষত নির্বাচনকে ঘিরে নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে।