রিপোর্ট: রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ফটকের সামনে টানা আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন আমজনতার দলের সদস্যসচিব তারেক রহমান। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মূল গেটের সামনে ১২৩ ঘণ্টা ধরে চলা এই অনশন কর্মসূচি এখন শহরের আলোচিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। দুর্বল শরীর, মুখে স্যালাইন, কথা বলার শক্তিও ক্রমশ কমে আসছে; তবু নিবন্ধনের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছেন তিনি। শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তারেক রহমান নীরবে শুয়ে আছেন, আশেপাশে তাঁর সমর্থক ও সাধারণ মানুষের ভিড়। কেউ তাঁকে সাহস জোগাতে আসছেন, কেউ কেবল দেখতে। শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তারেক রহমান জানান, শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করছেন, তবুও অনশন চালিয়ে যেতে চান। কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হলেও নিজের দাবিতে কতটা অনড়, সেটিই বুঝিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, “অবশ্যই আমি আমার সিদ্ধান্তে অনড় আছি। এটা চলবে, অবশ্যই চলবে।” তারেক রহমান অভিযোগ করেন, তিনটি উপজেলার শর্ত কোথা থেকে এলো এবং পরে তা ৩৩ উপজেলায় কিভাবে পরিণত হলো, সেটি তিনি মানতে পারছেন না। নিবন্ধন না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসি থেকে কেউ আর যোগাযোগ করেনি; কয়েকদিন আগে একজন উপসচিব এসেছিলেন, এরপর কেউ আর আসেননি, কোনো চিঠিও আসেনি। এদিকে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, অনশন যত দীর্ঘই হোক, নিয়মের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ নেই। তাঁর ভাষায়, “৫২২ ঘণ্টা অনশন হলেও কিছু করার নেই। নির্বাচন কমিশন কি নিয়মের বাইরে যেতে পারে? সো, ইউ গট মাই আনসার।” এর আগে নির্বাচন কমিশন জাতীয় নাগরিক পার্টি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তালিকায় জায়গা হয়নি তারেক রহমানের ‘আম জনতার দল’-এর। চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ার পর অনশনে বসেন তিনি। নিবন্ধনের দাবিতে অনশন চালিয়ে যাওয়া তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে গেলেও, তাঁর দাবি— শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বদলায় কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।