মিয়ানমারের জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী বন্যা মোকাবেলায় বৈদেশিক সহায়তা চেয়ে শনিবার একটি বিরল অনুরোধ করেছেন। তিন বছর ধরে গৃহযুদ্ধের মধ্যে থাকা এই দেশটির লাখ লাখ মানুষ ইতোমধ্যেই বন্যায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, লাওস ও থাইল্যান্ডে টাইফুন ইয়াগির আঘাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে আর প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে জান্তা সরকার।
রাজধানী নেইপিদো থেকে প্রায় এক ঘণ্টা দক্ষিণে তাউঙ্গুর বাসিন্দারা বন্যার পানিতে ভেলা চালাচ্ছে আর বন্যার পানি ভবনের ছাদ অবধি পৌঁছে গেছে। আরও একটি মঠে প্রায় ৩০০ জন আশ্রয় নেয়। তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার নেই । এই মুহুর্তে তাদের জরুরী ভিত্তিতে খাদ্য, পানি ও ওষুধ প্রয়োজন।বন্যার পানিতে অনেক কিছু তলিয়ে যাওয়ার পর তাউঙ্গুর কাছে উঁচু জমিতে তিনটি গরু নিয়ে আসেন কৃষক নাইং তুন। তিনি এএফপিকে বলেন, “অন্য জিনিসপত্র নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। মানুষ ও প্রাণীর জীবনের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছুই নেই।”
শুক্রবার গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমারের খবরে, জান্তাপ্রধান বলেন, “ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তা পেতে সরকারের কর্মকর্তাদের বাইরের দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্বাসন ব্যবস্থা পরিচালনার বন্দোবস্ত প্রয়োজন।”
এর আগে বিদেশ থেকে আসা মানবিক সহায়তা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী আটকে দিয়েছিল। গত বছর দেশটির পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোচায় আঘাত হানা প্রায় ১০ লাখ মানুষের কাছে ত্রান পৌঁছানোর চেষ্টাকারী ত্রাণ সংস্থাগুলোর ভ্রমণ অনুমোদন স্থগিত করে দেয় তারা। সে সময় জাতিসংঘ এই সিদ্ধান্তকে ‘অকল্পনীয়’ বলে মন্তব্য করেছিল।
২০০৮ সালে ঘূর্ণিঝড় নার্গিসের আঘাতে মিয়ানমারে অন্তত ১ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে জরুরি ত্রাণ সহায়তা আটকে দেওয়া এবং প্রাথমিকভাবে মানবিক সহায়তা কর্মী ও সরবরাহের সুযোগ দিতে অস্বীকৃতি জানানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল।