শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানা চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন ফেরারি আসামি নির্বাচনে অযোগ্য, ‘না ভোট’ বাধ্যতামূলক!! “ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে “ বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র: ‘আমরা কোনো দলের নয়’ — স্পষ্ট বার্তা দিলেন ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন বিজয়নগরে জাপা কার্যালয়ে সংঘর্ষ : ইটপাটকেল নিক্ষেপে আহত বহু, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা-পুলিশ আগামীকাল প্রকাশিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত রোডম্যাপ পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বিএনপির বৈঠক ১৩ বছর পর উপদেষ্টা মাহফুজের বাবা ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক ভারতের মাটিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবি বিদেশে বাংলাদেশি মিশন থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি সরানোর নির্দেশ, ‘জিরো পোর্ট্রেট’ নীতি কার্যকর

বিদ্যুৎ চুক্তি ‘অব্যাহত রাখতে পারে’ বাংলাদেশ আদানির সঙ্গে: রয়টার্সের প্রতিবেদন

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ১৫৩ Time View

আওয়ামী লীগের সময় করা বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো পর্যালোচনা জন্য একটি কমিটি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার; এর মধ্যে আদানির সঙ্গে করা চুক্তিও রয়েছে।

দাম নিয়ে আপত্তি থাকলেও সরবরাহ নিয়ে উদ্বেগ আর আইনি জটিলতার ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতের আদানি পাওয়ারের সঙ্গে করা বিদ্যুৎ চুক্তি বহাল রাখতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে।

রয়টার্স লিখেছে, বিষয়টি সম্পর্কে জানেন এমন দুটি সূত্র তাদের এমন আভাসই দিয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার পূর্বসূরির সময় করা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি চুক্তিগুলো পর্যালোচনা জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। এর মধ্যে আদানির সঙ্গে করা চুক্তিও রয়েছে।

আদানি গ্রুপের কোম্পানি আদানি পাওয়ার ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (পিডিবি) বিদ্যুৎ দিচ্ছে। গত বছরের মার্চ থেকে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় আদানির ১৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে এই বিদ্যুৎ বাংলাদেশে আসছে।

তবে স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে গত আওয়ামী লীগ সরকারও অস্বস্তিতে পড়েছিল। ২০১৭ সালে ওই চুক্তি করার ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থ যথাযথভাবে রক্ষা করা হয়েছিল কি না, তা এখন খতিয়ে দেখবে অন্তর্বর্তী সরকারের পর্যালোচনা কমিটি।

একটি সূত্রের বরাত দিয়ে রয়টার্স লিখেছে, ঝাড়খণ্ডের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে চাহিদার প্রায় এক দশমাংশ বিদ্যুৎ পাচ্ছে বাংলাদেশ। সে কারণে ওই চুক্তি রাতারাতি বাতিল করে দেওয়া সরকারের জন্য ‘কঠিন’।

তাছাড়া বড় ধরনের অনিয়মের প্রমাণ ছাড়া চুক্তি বাতিল করলে আদানি বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে নিতে পারে, সে কথাও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে।

দ্বিতীয় সূত্রটি রয়টার্সকে বলেছে, চুক্তি থেকে সরে আসা যদি সম্ভব নাও হয়, বিদ্যুতের দাম কমাতে আদানির সঙ্গে আলোচনায় বসা হতে পারে সরকারের জন্য একমাত্র বিকল্প।

এ বিষয়ে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “কমিটি বর্তমানে বিষয়টি পর্যালোচনা করছে, তাই এ বিষয়ে মন্তব্য করা সময়োচিত হবে না।”

২০২৩- ২৪ অর্থ বছরের সর্বশেষ অডিট রিপোর্টের বরাত দিয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, আদানি পাওয়ার প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য বাংলাদেশের কাছ থেকে প্রায় ১২ টাকা করে নেয়।

এই দর ভারতের অন্যান্য বেসরকারি উত্পাদকদের দরের তুলনায় ২৭ শতাংশ বেশি এবং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কেন্দ্রগুলোর তুলনায় ৬৩ শতাংশ বেশি।

আদানি ছাড়াও ভারতের অন্যান্য উৎপাদকের কাছ থেকে আরো ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনে বাংলাদেশ।

আদানির একজন মুখপাত্র রয়টার্সকে বলেছেন, বাংলাদেশ যে চুক্তি পর্যালোচনা করছে, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।

“দিন দিন বকেয়া বাড়ছে, তারপরও তো আমরা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালিয়ে যাচ্ছি। বকেয়ার বিষয়টি দিনকে দিন আমাদের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রমকেই এটা অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছে,” বলেন ওই মুখপাত্র।

রয়টার্স লিখেছে, আদানির বিদ্যুৎ বিল বাবদ বাংলাদেশের বকেয়ার পরিমাণ ৮০০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। আর অন্য ভারতীয় কোম্পানিগুলো মিলিয়ে বকেয়ার পরিমাণ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ডলার সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশকে ওই অর্থ পরিশোধে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে।

আদানি পাওয়ারের মুখপাত্র বলেন, “আমরা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এবং সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। তারা আমাদের শিগগিরই বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন।”

তবে আদানির সরবরাহ করা বিদ্যুতের দাম কেন অন্যদের চেয়ে বেশি, সে প্রশ্নের উত্তর দেননি মুখপাত্র।

বিদ্যুৎ কেনার জন্য আদানি পাওয়ারের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এ চুক্তি করেছিল ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর।

শেখ হাসিনার আমলে এ চুক্তি করার সময় সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, বিনা বিনিয়োগে স্বল্পমূল্যে বা স্থানীয় বাজারমূল্যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। এর ফলে বিনিয়োগের ধকল পোহাতে হবে না, বরং অনেক অর্থ সাশ্রয় হবে।

চুক্তি হওয়ার পর ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডায় ২০২০ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন শুরু করে আদানি। কিন্তু সেই চুক্তি সম্পর্কে সঠিক ধারণা বা তথ্যউপাত্ত বাংলাদেশের মানুষের হাতে ছিল না।

ভারতের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর নানা কেলেঙ্কারির তথ্য প্রকাশের মধ্যে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রির চুক্তিটিও ফাঁস হয়ে যায়। সেখানে দেখা যায়, স্বল্পমূল্যে নয়, বরং স্থানীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে বিদ্যুৎ আসবে আদানি থেকে। কয়লার দামও বেশি দিতে হবে। এ ছাড়া উৎপাদন না করলেও বছরে ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে দিতে হবে সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ডলার।

সক্ষমতা থাকার পরও দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে আদানির বিদ্যুৎ আমদানি করা নিয়ে সে সময় প্রশ্ন ওঠে। এ বিদ্যুৎ আমদানি করার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিশেষজ্ঞরা। তাছাড়া শেখ হাসিনা সরকারের দেওয়া তথ্যের সঙ্গে ফাঁস হওয়া চুক্তির তথ্য না মেলায় ব্যাপক সমালোচনা হয়।

অন্তর্বর্তী সরকার ওই চুক্তি পর্যালোচনার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপি।

দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, “আদানির কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন ছিল। সরকার ওই চুক্তি পর্যালোচনা করছে, এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলেই আমি আশা করি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2025 bornomalanews24.com
themesba-lates1749691102