বলিউডের মিস্টার পারফেকশনিস্ট আমির খান, যিনি তার অভিনয় দক্ষতা এবং সিনেমার প্রতি নিবেদন দিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। তিনি জানান, ক্যারিয়ারের শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব একটা মসৃণ ছিল না। আমির খান বলেন, “আমার একটা অদ্ভুত ধারণা ছিল যে, সাংবাদিকদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হলে তারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে আমার কাজের প্রশংসা করবেন। এতে আমি কখনোই জানতে পারব না আমার কাজ আসলেই ভালো হয়েছে কিনা। আমার পারিবারিক শিক্ষা অনুযায়ী সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতাম, তবে বেশি বন্ধুত্ব হলে মনে হতো আমি তাদের তোষামোদ করছি। তাই ইচ্ছা করেই দূরত্ব বজায় রাখতাম। কিন্তু মিডিয়া এটাকে ভুল বুঝতো, আর সেখান থেকেই ঝামেলা হতো।” ক্যারিয়ারের প্রতি নিবেদন এবং ‘লাগান’-এর সাফল্য আমির খানকে বলিউডে মিস্টার পারফেকশনিস্ট বলা হয় তার কাজের প্রতি গভীর মনোযোগ এবং নিখুঁত পরিকল্পনার জন্য। বছরে একটির বেশি সিনেমা করতে দেখা যায় না তাকে। প্রতিটি সিনেমার জন্য তিনি চরিত্রের লুক থেকে শুরু করে রিসার্চ পর্যন্ত সবকিছুতে নজর রাখেন। এমনকি শোনা যায়, দর্শকদের প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য মেকআপ নিয়ে হলে গিয়ে তাদের সঙ্গে সিনেমা দেখেন। তার ক্যারিয়ারের অন্যতম মাইলস্টোন সিনেমা ‘লাগান’ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আমির বলেন, “আমি যখন সিনেমাটা করছিলাম, বুঝতেই পারিনি এত ভালো হবে। অনেকেই বলেছিল, এই সিনেমা বক্স অফিসে টিকবে না। কিন্তু আমি সিনেমাটা করেছি কারণ এটি করতে আমি উপভোগ করছিলাম। এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে কাজটা নিয়েছিলাম। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল কাজটা ভালো লাগছে কিনা, বক্স অফিসের কথা ভেবে কাজ করিনি।” দর্শকদের প্রতি ভালোবাসা এবং কাজের প্রতি একাগ্রতা আমির খানের এই বক্তব্য তার কাজের প্রতি গভীর ভালোবাসা এবং দর্শকদের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতিফলন। তার মতে, কাজের প্রতি আন্তরিকতা এবং নিজের ভালো লাগা থেকেই সাফল্য আসে। তার সিনেমাগুলো শুধু বিনোদন নয়, বরং দর্শকদের জন্য একটি অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। ‘কেয়ামত সে কেয়ামত তাক’ দিয়ে চকলেট বয় হিসেবে তরুণীদের হৃদয় জয় করা আমির খান আজ বলিউডের অন্যতম সুপারস্টার। তার এই যাত্রা এবং দর্শকদের প্রতি তার দায়বদ্ধতা তাকে সত্যিকারের মিস্টার পারফেকশনিস্ট করে তুলেছে।