জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা: ভবনের করুণ দশা নিয়ে উদ্বেগ ৩২ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে বহুল প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচনের জন্য জোর প্রস্তুতি ও প্রাণচাঞ্চল্য দেখা দিলেও কেন্দ্রীয় বিতর্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জাকসুর নিজস্ব ভবনের করুণ চিত্র। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জাকসু ভবনটি অরক্ষিত ও কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ভবনের বাইরের নামফলক বিবর্ণ ও অস্পষ্ট হয়ে গেছে, আর ভেতরে নেই কোনো আসবাবপত্র বা বৈদ্যুতিক সংযোগ। ভেতরের পরিবেশ এমন যে, মনে হচ্ছে বহু বছর ধরে এটি ব্যবহারের বাইরেই ছিল। শিক্ষার্থীরা শুধু অব্যবস্থাপনার অভিযোগই করেননি, বরং সন্ধ্যার পর ভবন এলাকায় নিয়মিত মাদক সেবীদের আড্ডা বসার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এতে নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে জাকসুর কার্যক্রম পরিচালনার বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮ ব্যাচের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে জাকসু নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি আমেজ তৈরি হয়েছে। তিনি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান, এই আমেজে ইতিবাচক সাড়া দিতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জাকসু ভবন সংস্কার হলে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা কাটিয়ে ভবনটি আবার সচল হয়ে উঠবে। অন্যদিকে, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা বলেন, জাকসুর ভবন শুধুমাত্র একটি দাপ্তরিক কাঠামো নয়, এটি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চার প্রতীক। তার মতে, যদি এই প্রতীকের এমন করুণ দশা হয়, তাহলে তা একটি প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বের স্বপ্নকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারে। তিনি আশা করেন, নির্বাচনের পূর্বেই জাকসু ভবনের সংস্কার হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান বলেন, জাকসু ভবন পরিদর্শন করা হয়েছে এবং পুনঃনির্মাণ সম্ভব নয়, তবে অবকাঠামোগত উন্নয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে কর্তৃপক্ষ ভবনের সংস্কারে কি পদক্ষেপ নেয় এবং শিক্ষার্থীদের এই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হয়। জাকসুর ভবন সংস্কার হলে তা শুধু একটি ভবন নয়, বরং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চার প্রতীক হিসেবে নতুন করে জেগে উঠবে।