মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল আমদানির ধারা অব্যাহত রেখেছে ভারত। এর ফলে বিপুল আর্থিক সাশ্রয় ঘটেছে, যার পরিমাণ গত সাড়ে তিন বছরে অন্তত ১২৬০ কোটি ডলার। ভারতীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরও ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ভারতীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হলেও, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি। উল্টো, রাশিয়ার তেলের আমদানির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করার পর, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, তবে ভারত তাদের সিদ্ধান্তে গুরুত্ব দেয়নি।
ভারত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাশিয়া থেকে ৬৩০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে, যার একটি বড় অংশ হলো অপরিশোধিত তেল এবং সামরিক সরঞ্জাম। বিশেষ করে, ইউক্রেন যুদ্ধের পর ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ ৩৫ শতাংশে পৌঁছে গেছে, যা আগে ছিল অনেক কম।
রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করতে শুরু করার পর, ভারত তেল আমদানির পরিমাণ বাড়িয়ে বিপুল সাশ্রয় করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাশিয়ার তেল না কিনে অন্য দেশের তেল কিনলে ৪৮৭ কোটি ডলার অতিরিক্ত খরচ হতো, এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে সাশ্রয় হয় ৫৪১ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে যদিও সাশ্রয়ের পরিমাণ কিছুটা কমে ১৪৫ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, তবে ভারত এখনও রাশিয়ার তেল কিনে লাভবান হচ্ছে।
তবে, বর্তমানে রাশিয়ান তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে ভারত ততটা লাভজনক সুবিধা পাচ্ছে না। শিপিং, বিমা এবং রিস্ক প্রিমিয়ামের মতো খরচ বাড়ানোর ফলে, ভারতের লাভের পরিমাণ কিছুটা কমে গেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রাশিয়ান তেলের প্রতি ব্যারেল গড় ছাড় ছিল ৮.৫ ডলার, যা এখন ৩ ডলারে নেমে এসেছে।
অতএব, ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হলেও, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পরেও এর শাস্তি হিসেবে বাড়ানো শুল্কের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে।