জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মানবতাবিরোধী মামলার রায় আজ ঘোষণা আজ (সোমবার) দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ একটি রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে—জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে। এই ঐতিহাসিক রায়ের ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচারিত হবে, যা বিশ্বের দরবারে সরাসরি প্রত্যক্ষ করা যাবে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় এ বিচার কার্যক্রম প্রদর্শিত হবে। রায়ের কার্যক্রম দেশের সব গণমাধ্যম বিটিভির মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করবে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স থেকেও লাইভ সম্প্রচার নিশ্চিত করা হয়েছে। বিচারকাজের সুষ্ঠু সম্প্রচারের জন্য বিটিভির একটি বিশেষ টিম ইতোমধ্যেই ট্রাইব্যুনালে পৌঁছে গেছে। বিচারক প্যানেল সোমবার বেলা ১১টার পর রায় ঘোষণা করবেন, যার নেতৃত্বে আছেন ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার। রায়ের পরিবেশ সুরক্ষিত রাখতে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও নিয়োজিত রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ ও জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। মামলার দীর্ঘ বিচারকাজে ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর জেরা সম্পন্ন হয়েছে। প্রসিকিউশন ও ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক পাল্টা যুক্তিখণ্ডনও ৯ কার্যদিনে শেষ হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য ও চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তি উপস্থাপনার পর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও আরো এক আসামি কামালের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে, যদিও মামলার আরেক আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত অপেক্ষায় থাকা আছে। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন বিশ্বাস প্রকাশ করেছেন, শেখ হাসিনা ও কামাল খালাস পাবেন। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে পাঁচটি মানবতাবিরোধী অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উসকানি, হত্যাকাণ্ড এবং লাশ দাহের ঘটনার মতো গুরুতর বিষয়। মামলার নথিপত্রের আকার আড়াই হাজার পৃষ্ঠার বেশি, যার মধ্যে তথ্যসূত্র, প্রমাণাদি এবং শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত। মোট ৮৪ জন সাক্ষীর বক্তব্য গ্রহণ করা হয়। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন গত ১২ মে চিফ প্রসিকিউটরের কাছে জমা দেওয়া হয়। আজকের রায় দেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা জনগণ ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা তুলে ধরবে।