পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপূজায় প্রতিবারই বড় আকারের প্রতিমা দেখা যায়। কিন্তু চলতি বছর রাজ্যের সবচেয়ে ভারী দুর্গা প্রতিমার নজির গড়েছে ব্যারাকপুরের এভারগ্রিন দুর্গা উৎসব কমিটি। প্রায় দেড় হাজার কেজি ওজনের এই অষ্টধাতুর দুর্গা প্রতিমা এরই মধ্যে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
এভারগ্রিন ক্লাবের ৩৭তম বর্ষের পূজার থিম ‘স্পন্দন’, যার মাধ্যমে তারা নগরজীবনের পরিবেশগত সমস্যা তুলে ধরেছে। পৃথিবীজুড়ে চলমান উষ্ণায়ন এবং প্রকৃতির অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে বার্তা দিতেই এই প্রতিমা তৈরি হয়েছে। নগরায়নের ফলে আকাশছোঁয়া ভবন, গাছ কাটার হার বৃদ্ধি এবং পানির অপচয় পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। এই থিমের মাধ্যমে সঠিক সময়ে সচেতনতার বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
প্রতিমার শিল্পী ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার মূলত বিভিন্ন পরিত্যক্ত ধাতব সামগ্রী দিয়ে প্রতিমা নির্মাণ করেন। গাড়ি, সাইকেল, কলকারখানার যন্ত্রাংশ, গ্যাস বার্নার, লোহার জাল ব্যবহার করে দুর্গা প্রতিমার কাঠামো তৈরি হয়েছে। এছাড়া দুর্গার মুখ তামার, লক্ষ্মীর মুখ পিতলের, সরস্বতীর মুখ দস্তার এবং গণেশের মুখ তৈরি হয়েছে রুপা দিয়ে। প্রতিমার অলংকার তৈরিতে সামান্য সোনা ব্যবহার করা হয়েছে।
হাবরার বানপুরে কয়েক মাস ধরে এই বিশাল আকারের প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। এত ভারী প্রতিমা মণ্ডপে পৌঁছানোও একটি বড় চ্যালেঞ্জ। ক্রেন এবং বিশেষ ট্রাকের সাহায্যে প্রতিমাকে নিরাপদে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে।এভারগ্রিন দুর্গা উৎসব কমিটির সদস্যরা জানান, আমরা এই পূজার মাধ্যমে পরিবেশ সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চাই। অতিরিক্ত গাছ কাটা এবং পানির অপচয় আমাদের জীবনে গভীর প্রভাব ফেলছে। করোনাকালে অক্সিজেনের অভাব আমরা লক্ষ্য করেছি। তাই পরিবেশ রক্ষার জন্য আমাদের এই প্রচেষ্টা।এই বিশেষ অষ্টধাতুর প্রতিমা শুধু তার বিশাল ওজনের জন্য নয়, পরিবেশ সচেতনতার বার্তার জন্যও দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।