রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পর এর সদস্যভুক্ত যে কোনো দেশের জন্য পুতিনকে গ্রেপ্তার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর মঙ্গোলিয়া আইসিসি সনদে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ।
গত বছর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর এবারই প্রথম আইসিসির কোনো সদস্য দেশ সফরে গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। গ্রেপ্তারের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই মঙ্গলবার (০৩ সেপ্টেম্বর) মঙ্গোলিয়ার রাজধানী উলানবাটোরে পা রাখেন ভ্লাদিমির পুতিন।
সফরকালে পুতিনকে গ্রেপ্তার করতে মঙ্গোলিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে আইসিসি, ইউক্রেন, পশ্চিমা কয়েকটি দেশ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এমনকি মঙ্গোলিয়ারও পুতিনের বিরুদ্ধে বড় বিক্ষোভের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে কি মঙ্গোলিয়া আইসিসির পরোয়ানা শুনবে? পুতিন কি গ্রেপ্তার হবেন চেঙ্গিস খানের দেশে?
না, তেমনটা ঘটেনি। পশ্চিমা চাপ থাকলেও পুতিনকে গ্রেপ্তার করছে না মঙ্গোলিয়া সরকার। এমনকি রাজধানী উলানবাটোরে পৌঁছালে পুতিনকে গ্রেপ্তার নয় বরং উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।
পুতিনের মঙ্গোলিয়া সফর নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে কিয়েভ। গত সোমবার কিয়েভ জানিয়েছে, যদি বিমানবন্দরে নামার পর মঙ্গোলিয়ার কর্তৃপক্ষ পুতিনকে গ্রেপ্তার না করে তাহলে তার (পুতিনের) ‘যুদ্ধাপরাধের দায়’ মঙ্গোলিয়াকেও নিতে হবে।
আদেশ মানার বিষয়ে সদস্য দেশগুলোর বাধ্যবাধকতার কথা গত সপ্তাহে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে আইসিসি। মঙ্গোলিয়া যেহেতু আইসিসির সদস্য, তাই আদেশ মেনে পুতিনকে গ্রেপ্তারে দেশটির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে দেশটি যদি এ আদেশ না মানে, সেক্ষেত্রে তেমন কিছু করার নেই।
পূর্ব এশিয়ার দেশ মঙ্গোলিয়া। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। রাশিয়ার সঙ্গে মঙ্গোলিয়ার ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। আর চীনের সঙ্গে রয়েছে কৌশলগত বাণিজ্য সম্পর্ক।
সোভিয়েত ইউনিয়নের আমলে মঙ্গোলিয়া সোভিয়েতভুক্ত ছিল। তবে সোভিয়েতের পতনের পর থেকে মঙ্গোলিয়া বেইজিং ও মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলেছে। গত সপ্তাহে ক্রেমলিন জানিয়েছে, মঙ্গোলিয়া সফরের সময় পুতিনকে গ্রেপ্তার করা, না করা নিয়ে উদ্বেগের কোনো কারণ নেই।