লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নতুন প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ নাইম কাসেম। তিন দশকের বেশি সময় ধরে সংগঠনটির উপ-মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করে আসা কাসেমের নেতৃত্ব গ্রহণ নতুন অধ্যায় বলে বিবেচিত হচ্ছে।
১৯৫৩ সালে বৈরুতে জন্মগ্রহণ করেন নাইম কাসেম। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় লেবাননের শিয়া দল আমল মুভমেন্টের মাধ্যমে। ১৯৭৯ সালে ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রভাব তাকে আকৃষ্ট করে। হিজবুল্লাহর প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক সভাগুলোতে অংশ নিয়ে তিনি সংগঠনটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।১৯৯১ সালে হিজবুল্লাহর তৎকালীন মহাসচিব আব্বাস আল-মুসাভি কাসেমকে সংগঠনের উপ-প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন। মুসাভি পরবর্তীতে এক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হলে হাসান নাসরাল্লাহ নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তার বিশ্বস্ত সহকর্মী হিসেবেও সংগঠনের নেতৃত্ব গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন কাসেম।
হিজবুল্লাহর মুখপাত্র হিসেবে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলা থেকে শুরু করে সংগঠনের রাজনৈতিক পরিকল্পনাগুলোতে নাইম কাসেমের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যণীয়।
গত ৮ অক্টোবর এক টেলিভিশন ভাষণে নাইম কাসেম ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর সংঘাতকে ‘কে আগে চোখের জল ফেলবে’ এমন এক যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, হিজবুল্লাহ কখনোই প্রথমে চোখের জল ফেলবে না।
তবে লেবাননের সংসদীয় স্পিকার নাবিহ বেরির যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানিয়ে তিনি ইঙ্গিত দেন, গাজা যুদ্ধবিরতির শর্ত ছাড়াই এই আলোচনা হতে পারে। এটি হিজবুল্লাহর বর্তমান অবস্থানের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহর তৎকালীন প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ। এরপর কাসেম প্রথমবারের মতো ৩০ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্য ভাষণে বলেন, সংগঠনটি দ্রুত নতুন নেতা নির্বাচন করবে এবং ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে।
নাইম কাসেমের নেতৃত্বে হিজবুল্লাহর লক্ষ্য ও কৌশলে পরিবর্তন আসবে বলে অনেকে মনে করলেও তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে স্পষ্ট যে, ইসরায়েলের প্রতি কড়া অবস্থান বজায় রেখেই সংগঠনটি সামনের দিকে অগ্রসর হবে।
সূত্র: রয়টার্স