মানিকগঞ্জ, বুধবার – মানিকগঞ্জে বিএনপিপন্থি আইনজীবী মেজবাউল হকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। তিনি বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে লড়াই করছেন, যার জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মেজবাউল হক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এবং জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি।
গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে জেলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতা সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে তারা মেজবাউল হকের অপসারণসহ চার দফা দাবি জানায়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) মানিকগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ লিয়াকত হোসেন মোল্লার আদালতে ৬ আসামি আত্মসমর্পণ করেন। এসব আসামি ছাত্রজনতার ওপর হামলার অভিযোগে দৌলতপুর থানায় দায়ের করা মামলার আসামি ছিলেন। আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করলে, আইনজীবী মেজবাউল হকের মাধ্যমে আদালত ওই ছয়জনের জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে ছিলেন দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম আজিজুল হক, ধামশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী, এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন।
এ ঘটনার পর স্থানীয় বিএনপি নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানিকগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান বলেন, “এখনও রক্তের দাগ মুছে যায়নি, এমন পরিস্থিতিতে একজন বিএনপির সিনিয়র নেতা কীভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের জামিনে সহায়তা করেন, তা আমার বোধগম্য নয়।”
এ সময়, মানিকগঞ্জ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম থেকেও মেজবাউল হকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়। তারা দাবি করেন, মেজবাউলকে দ্রুত আইনজীবী সমিতি থেকে বহিষ্কার করা উচিত।
তবে, মেজবাউল হক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “এটি একটি মানবিক বিষয়। আমি আইনগতভাবে তাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। আমার কাছে বিষয়টি রাজনৈতিক নয়, বরং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কাজ করা উচিত ছিল।”
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপির সমর্থকরা মেজবাউল হকের এ পদক্ষেপকে ‘দলবিরোধী’ বলে মনে করলেও, আইনজীবীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইনজীবী হিসেবে তার মূল দায়িত্ব আদালতে সুবিচারের প্রচার করা, যার মধ্যে রাজনৈতিক পরিচয় বা দলের প্রতি আনুগত্য কোনো বাধা হতে পারে না।