এক রাতে, এক ভয়াবহ হামলায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আঘাতে প্রাণ হারালেন চার শতাধিক মানুষ, আর আহত হলেন আরও শত শত। তবে, ঘটনা এখানেই থেমে থাকে না—ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে রয়েছেন আরও অনেক নিষ্পাপ মানুষ, যাদের জীবনবাজি অবস্থা অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যায়। এই পরিস্থিতির মধ্যে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এমন একটি আশঙ্কাজনক ঘোষণা দিয়েছেন, যা শুধুমাত্র ভবিষ্যতের ব্যাপারে ভীতির সঞ্চার করে—গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা যে কেবল শুরু, সেই অশুভ কথাটা তিনি স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন। তার কথায়, আসন্ন আলোচনা গুলি হবে এক তীব্র “আক্রমণের মধ্যে”, এমন এক রক্তাক্ত খেলা, যেখানে একের পর এক মৃত্যু শুধুমাত্র একটি পর্ব।
এই অন্ধকার দৃশ্যটি ১৯ মার্চের সকালে রিপোর্ট করা হয়, যখন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আকস্মিকভাবে গাজায় বোমা হামলা চালায়। এমন এক সময়ে, যখন পবিত্র রমজান মাসে মুসলিমরা সেহরি খাচ্ছিলেন, হামলার বিস্ফোরণে আকাশ-বাতাস গর্জন করে ওঠে। ৪০৪ জনের মৃত্যু, ৫৬২ জনেরও বেশি মানুষের আহত হওয়া—এটা ছিল গত জানুয়ারির যুদ্ধবিরতির পর সবচেয়ে বড় হামলা। একের পর এক ধ্বংসস্তূপের চিত্রগুলো চোখে পড়ে, যেগুলো জীবনের রক্তাক্ত চিত্রকর্ম হয়ে ওঠে, যা দেখলে সারা দুনিয়ার হৃদয় ক্ষত-বিক্ষত হয়ে যায়।
তবে, সবচেয়ে বিপজ্জনক ছবি ছিল ওইসব নির্দোষ, বেসামরিক মানুষদের, যাদের মধ্যে অনেক শিশু এবং নারী ছিল। ভোরের অন্ধকারে, যখন তারা ঘুমাচ্ছিল, তখন তাদের বাড়ি ওপর থেকে বোমা হামলা চালিয়ে শেষ করে দেওয়া হয়। এরপর, ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মাধ্যমে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ভাষণ দেন, যেখানে তিনি বলেন, “আমরা যুদ্ধবিরতি কয়েক সপ্তাহ বাড়িয়েছিলাম, তবে বিনিময়ে আমরা কোন বন্দি মুক্তি পাইনি।” তারপর তিনি বলেন, “আমরা দোহায় প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম, স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছি, কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করেছে।”
এদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, গত বৃহস্পতিবার উইটকফ উভয় পক্ষের কাছে এক হালনাগাদ প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে ছিল ৫০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য পাঁচজন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তি, ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি, মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার এবং তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির আলোচনার দ্বিতীয় ধাপ।
তবে, হামাস শুক্রবার জানায়, তারা এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছে, এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের জন্য দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করার বিষয়ে তারা একমত। এক ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্যের মুক্তি এবং চার দ্বৈত নাগরিকের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে তারা সম্মত হয়েছে।
কিন্তু, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জানিয়ে দেন, “আমি হামাসকে আগেই সতর্ক করেছিলাম, যদি তারা আমাদের বন্দিদের মুক্তি না দেয়, আমরা আবার যুদ্ধ শুরু করব, এবং ঠিক তেমনটাই করেছি।”