চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের আমদানি এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) খোলার এবং নিষ্পত্তির পরিমাণে একটি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে—প্রায় ২০ শতাংশ। এই প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হিসেবে রেমিট্যান্স ও রপ্তানির বৃদ্ধি, যা ব্যাংক খাতে ডলারের প্রবাহকে শক্তিশালী করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমদানি এলসি খোলা হয়েছে ৬ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের (ফেব্রুয়ারি-২০২৪) তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ (১৯.৯২ শতাংশ) বেশি। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এই পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের প্রথম দুই মাসেই আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা একটি আশাব্যঞ্জক সংকেত। ফেব্রুয়ারিতে এলসি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে। মোট ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি হয়েছে, যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৪ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। ফলে, গত বছরের তুলনায় এলসি নিষ্পত্তির হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অন্যদিকে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশে ২ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে একই সময়ে ১৪ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল।
২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে আমদানি এলসি পেমেন্ট হয়েছে ৪৬ বিলিয়ন ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ৪৪ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে শিল্পের কাঁচামাল আমদানির পেমেন্ট বেড়েছে ১০ দশমিক ৪১ শতাংশ। পেট্রোলিয়াম এবং অন্যান্য পণ্যের আমদানির পেমেন্টও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতে ২৫ শতাংশ এবং ইন্টারমিডিয়েট গুডসে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ পেমেন্ট কমেছে।
এছাড়া, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। এই সময়ে আমদানি এলসি খোলার পরিমাণ আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে। ভোগ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামালসহ বেশ কিছু খাতে আমদানি বেড়েছে, যদিও মূলধনি যন্ত্রপাতি বা ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। ইন্টারমিডিয়েট গুডস ও পেট্রোলিয়ামের আমদানি কমেছে, যা সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির একটি জটিল চিত্র তুলে ধরে।