কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে নির্মিত সিনেমাও এখন থেকে অস্কারের শীর্ষ পুরস্কার জিততে পারবে। সম্প্রতি অ্যাকাডেমি অফ মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এই নতুন নিয়ম জারি করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, এআই এবং অন্যান্য ডিজিটাল টুলের ব্যবহার কোনো সিনেমার অস্কার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করবে না। তবে বিজয়ী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানুষের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হবে। অ্যাকাডেমি তাদের এই ঘোষণার মাধ্যমে আরও কিছু নিয়ম পরিবর্তন করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাকাডেমি সদস্যদের এখন থেকে প্রতিটি বিভাগে মনোনীত সকল সিনেমা দেখতে হবে। এর মাধ্যমে তারা চূড়ান্ত রাউন্ডের ভোটে অংশ নিতে পারবেন এবং তাদের ভোটই নির্ধারণ করবে অস্কার বিজয়ীদের। এআই ব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় আসে এ বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত অস্কার অনুষ্ঠানের পর। ওই অনুষ্ঠানে ‘ব্রুটালিস্ট’ ছবিতে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জিতেছিলেন অ্যাড্রিয়ান ব্রডি। এই সিনেমায় অভিনেতার উচ্চারণ উন্নত করতে জেনারেটিভ এআই ব্যবহার করা হয়েছিল, যা হাঙ্গেরিয়ান ভাষায় কথা বলার ক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে। একইভাবে, অস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী এমিলিয়া পেরেজ তার গানের কণ্ঠ উন্নত করতে ভয়েস ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিলেন। তবে এআই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগও রয়েছে। চিত্রনাট্যকাররা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, বিভিন্ন স্টুডিও গবেষণা, চিকিৎসা এবং স্ক্রিপ্ট লেখার মতো কাজের জন্য ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটির মতো টুল ব্যবহার করে ব্যয় কমানোর এবং সময় সাশ্রয়ের চেষ্টা করবে। এর ফলে সৃজনশীল কাজের ক্ষেত্রে মানুষের ভূমিকা কমে যেতে পারে বলে তারা মনে করছেন। অ্যাকাডেমির এই নতুন নিয়ম চলচ্চিত্র শিল্পে এআই প্রযুক্তির ব্যবহারকে বৈধতা দিয়েছে এবং এটি ভবিষ্যতে সিনেমা নির্মাণের ধারা পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তবে সৃজনশীলতার সঙ্গে প্রযুক্তির ভারসাম্য বজায় রাখা চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।