ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে। শুক্রবার অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন মন্ত্রণালয়টি দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে ১৯৬৮ সালের অসামরিক প্রতিরক্ষা বিধির ১১ নম্বর ধারা অবিলম্বে কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে। এই ধারা সাধারণত যুদ্ধ বা গভীর সংকটকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োগ করা হয়, যা রাজ্যগুলোকে জননিরাপত্তা ও অত্যাবশ্যক পরিষেবা সচল রাখতে বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো জরুরি চিঠিতে মুখ্যসচিব ও প্রশাসকদের কাছে তিনটি মূল নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমত, কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, হাসপাতাল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তৃতীয়ত, জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত সরঞ্জাম ক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রচলিত আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়ানোরও অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনাকে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দুদেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক টানাপোড়েন বাড়ছে, যার জেরে কেন্দ্রীয় সরকার সম্ভাব্য কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্যগুলোকে সর্বোচ্চ প্রস্তুত রাখতে চাইছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ দেশজুড়ে একটি “নিরাপত্তা সতর্কতা” হিসেবেই কাজ করবে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এই নির্দেশনা জারির পর থেকেই রাজ্যগুলো তাদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক অবস্থানে রাখতে বলেছে। পাশাপাশি, হাসপাতাল, পরিবহন ও জরুরি যোগাযোগব্যবস্থা পরীক্ষা করে দেখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত কূটনৈতিক ও সামরিক স্তরে চলমান জটিলতারই প্রতিফলন। যদিও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এখনও কোনো বিস্তারিত বিবৃতি দেওয়া হয়নি, তবে এই জরুরি প্রস্তুতি দেশবাসীর মধ্যে এক নতুন আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। উত্তেজনার এই মুহূর্তে ভারতীয় নাগরিকদের শান্ত থাকারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। আগামী দিনগুলোতে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নিয়ে সারা বিশ্বের নজর এখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে।