ভারত বাংলাদেশি তৈরি পোশাকসহ বেশ কিছু পণ্য তাদের স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৈদেশিক বাণিজ্য অধিদপ্তর (ডিজিএফটি) শনিবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশি তৈরি পোশাকসহ নির্দিষ্ট কিছু পণ্য শুধুমাত্র নহাভা শেভা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে। স্থলপথে এসব পণ্য আর ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে, এই নিষেধাজ্ঞা ভারতের হয়ে নেপাল ও ভুটানে রপ্তানি হওয়া ট্রানজিট পণ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ, ট্রানজিট ব্যবহৃত পণ্য এ নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে থাকবে। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের কিছু নির্দিষ্ট পণ্য ভারতের স্থলবন্দর দিয়ে প্রবেশ করায় তাৎক্ষণিকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা এবং মিজোরামের কোনও শুল্ক পয়েন্টে, পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্ধা এবং ফুলবাড়ি শুল্ক পয়েন্ট দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কার্বনেটেড পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, তুলার বর্জ্য, প্লাস্টিক পণ্য (পণ্য তৈরির উপাদান ছাড়া) এবং কাঠের আসবাবপত্র আমদানি করা যাবে না। তবে, বাংলাদেশের মাছ, এলপিজি, ভোজ্যতেল এবং চূর্ণ পাথরের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের পণ্য পরিবহনের খরচ বাড়িয়ে দেবে, কারণ এখন এই পণ্যগুলো শুধুমাত্র কলকাতা এবং মহারাষ্ট্রের নহাভা শেভা সমুদ্রবন্দর দিয়ে পরিবহন করা যাবে। ফলে, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য আর্থিক চাপ বৃদ্ধি পাবে। গত মার্চে চীনের বেইজিংয়ে একটি আলোচনা সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে স্থলবেষ্টিত অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের “সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক” হিসেবে অভিহিত করেন। এই বক্তব্যের পর ভারত বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। সর্বশেষ, নতুন এই পদক্ষেপ উভয় দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সংকটময় করে তুলেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভারতের এই সিদ্ধান্ত শুধু বাণিজ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে না, বরং উভয় দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কেও উত্তেজনা বাড়াবে।