অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আসন্ন যুক্তরাজ্য সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। বিশেষ করে লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর সম্ভাব্য আনুষ্ঠানিক বৈঠক বা সৌজন্য সাক্ষাৎ নিয়ে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের দাবি, ‘ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে’ এবং টোকিওতে ড. ইউনূসের মন্তব্য, ‘একটিমাত্র দল ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়’—এই দুই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ বিরাজ করছে। তবে, ঢাকা বা লন্ডনের কোনো কূটনৈতিক সূত্রই এখনো এ বৈঠক চূড়ান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করতে পারেনি। সূত্র জানায়, দুই নেতার মধ্যে লন্ডনে একটি বৈঠক আয়োজনের চেষ্টা চলছে। সরকারের তরফে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে, তবে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ও রোডম্যাপ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সরকারের দূরত্ব বৈঠক আয়োজনের ক্ষেত্রে কিছুটা বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির তরফে বৈঠকের শর্ত হিসেবে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ এবং নির্বাচনি রোডম্যাপের ব্যাপারে আগাম নীতিগত ঐকমত্যের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার ব্যাংকক সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক আয়োজনের ভূমিকা পালনকারী একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ঈদের পরপরই লন্ডনে যাচ্ছেন। তবে, বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থান নিয়ে ওই কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কারণে দলটি তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছিল। ড. ইউনূসের সফরের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে, তবে এখন পর্যন্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা হয়নি। এ কারণে ঈদের পর লন্ডনে দুই নেতার সাক্ষাৎ ও বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়ে তোড়জোড় চলছে। ড. ইউনূস ৯ জুন যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে যাত্রা করবেন এবং ১২ জুন তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে ‘কিং চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন। সফরকালে তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার, বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বাডেনক, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের স্পিকারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এদিকে, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো ড. ইউনূসের সফরের সময় বিক্ষোভ ও কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যা সফরের সময় গোপনীয়তা রক্ষা করতে বাধ্য করছে। ড. ইউনূসের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তিনি ১০টি দেশে সফর করেছেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় হলো, লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকটি চূড়ান্ত হয় কিনা এবং এর ফলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কী পরিবর্তন আসে।