আগামী বছরের হজ মৌসুমকে ঘিরে হাজিদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সৌদি আরব। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এ নির্দেশনায় এবারের হজযাত্রীদের জন্য টিকা গ্রহণ ও স্বাস্থ্য পরীক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে বেশ কিছু কঠোর শর্তও আরোপ করা হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, করোনা, মেনিনজাইটিস, পোলিও এবং পীতজ্বর—এই চারটি টিকা হজযাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এসব টিকা ছাড়া কোনো হজযাত্রী সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমতি পাবেন না। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কভিড-১৯ টিকা অবশ্যই সৌদি আরবে অনুমোদিত প্রস্তুতকারকের হতে হবে এবং সর্বশেষ ডোজ ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নেওয়া থাকতে হবে। সেই সঙ্গে হজযাত্রার অন্তত ১৪ দিন আগে টিকা নেওয়া সম্পন্ন করতে হবে। অন্যদিকে, মেনিনজাইটিসের টিকা হজের কমপক্ষে ১০ দিন আগে নিতে হবে এবং এই টিকার মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। পোলিও ঝুঁকিপূর্ণ দেশের হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে নির্দেশনা আরও কঠোর। তাদের হজযাত্রার অন্তত ৪ সপ্তাহ আগে পোলিও টিকা নিতে হবে এবং আন্তর্জাতিক টিকা সনদে তা উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক। পীতজ্বরের টিকা ৯ মাসের বেশি বয়সী যেসব হাজিরা ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের, তাদের জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেসব ব্যক্তি গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন—যেমন অঙ্গ বিকল, দীর্ঘমেয়াদি জটিল অসুস্থতা, মানসিক বা স্নায়বিক সমস্যা, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা, সংক্রামক রোগ বা ক্যানসারের চিকিৎসাধীন—তারা হজে অংশ নিতে পারবেন না। কারণ হজের সময় শারীরিক পরিশ্রম, জনসমাগম এবং নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে, যা এসব ব্যক্তির জন্য মারাত্মক হতে পারে। নির্ধারিত টিকা গ্রহণ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ যাত্রীদের সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে কোয়ারেন্টাইন বা অতিরিক্ত স্বাস্থ্য যাচাইয়ের ব্যবস্থাও রাখা হবে। বিগত বছরের হজ আয়োজন এবং কভিড-১৯ মহামারির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবারের নির্দেশিকা তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সব হাজি যেন সুস্থ, নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারেন, এজন্যই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নতুন এই নির্দেশনা হজযাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।