সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। রাজধানীর গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে এ সাক্ষাৎকালে সেনাপ্রধানের সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী বেগম সারাহনাজ কামালিকা রহমান।
সেনাপ্রধান রাত সাড়ে আটটার দিকে বিএনপি নেত্রীর বাসভবনে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান খালেদা জিয়ার নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহি আকবর। প্রায় ৪০ মিনিটের আলোচনায় সেনাপ্রধান ও তাঁর সহধর্মিণী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান এই সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লন্ডনে চিকিৎসার প্রস্তুতি
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য আগামী সপ্তাহে লন্ডন যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তবে সফরের সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
অসুস্থতা ও রাজনৈতিক পটভূমি
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বহু জটিল রোগে ভুগছেন। আর্থ্রাইটিস, হৃদ্রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি ও ডায়াবেটিসের পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন শারীরিক নানা জটিলতায় আক্রান্ত।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড পাওয়া খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী থাকার পর ২০২০ সালের মার্চে নির্বাহী আদেশে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি পান। এরপর বিভিন্ন সময়ে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলেও বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
অবশেষে গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ফলে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে পরদিন ৬ আগস্ট খালেদা জিয়াকে নির্বাহী আদেশে মুক্তি দেওয়া হয়।
উন্নত চিকিৎসার আশা
দেশে-বিদেশে বিভিন্ন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন সফর তাঁর দ্রুত সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চিকিৎসক ও পরিবার।
এ সাক্ষাৎ ও লন্ডন সফরের প্রস্তুতি খালেদা জিয়ার শারীরিক পুনর্বাসন ও রাজনৈতিক সক্রিয়তার জন্য নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।