ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই নতুন করে অস্থিরতার বার্তা দিল ইসলামাবাদ। শনিবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী সফলভাবে ৪৫০ কিলোমিটার দূরপাল্লার ‘আবদালি’ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, যা সরাসরি ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত হানতে সক্ষম। দেশটির ইনডাস্ট সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়, যা আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
**কেন এই পরীক্ষা?
** পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, এই উৎক্ষেপণের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর কারিগরি সক্ষমতা যাচাই এবং সদস্যদের প্রশিক্ষণের মান নিশ্চিত করা। ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেন সেনাবাহিনীর কৌশলগত বাহিনীর কমান্ডার, পরিকল্পনা বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনির অংশগ্রহণকারী সেনা সদস্য ও বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন।
**উত্তেজনার পটভূমি
** এই পরীক্ষা এসেছে এমন এক সময়ে, যখন কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক চরম উত্তপ্ত অবস্থায় রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছিলেন অন্তত ২৬ জন। এর জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। এর মধ্যেই পাকিস্তান তাদের সীমান্তবর্তী এলাকায় পূর্ণমাত্রার সামরিক মহড়া চালায়, যা সম্পর্কের অবনতিকে আরও ত্বরান্বিত করে।
**আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রভাব
** ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার এই ঘটনা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আবদালি ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা শক্তি বাড়ালেও এটি প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই ধরনের পরীক্ষা যেকোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনার দিকে নিয়ে যেতে পারে।
**ভবিষ্যৎ কী?
** পাকিস্তানের সাম্প্রতিক এই সামরিক তৎপরতা দেখিয়ে দিচ্ছে যে দেশটি যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। তবে এই পদক্ষেপ শান্তি প্রতিষ্ঠার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াল কি না, তা এখন দেখার বিষয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত হবে দক্ষিণ এশিয়ার এই সংকট নিরসনে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা, নতুবা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।