বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৬ অপরাহ্ন

শান্তি স্থাপনে বিশ্বনেতাদের উদ্যোগ জরুরি,সংঘাতময় মধ্যপ্রাচ্য!

bornomalanews
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৪৩ Time View

গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের হামলা বন্ধে জাতিসংঘসহ শক্তিমান দেশগুলোর নীরব ভূমিকার কারণে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিলতর হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে হামাস, হিজবুল্লাহ ও ইরানের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার প্রতিশোধ হিসাবে মঙ্গলবার ইসরাইলকে লক্ষ করে নজিরবিহীন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। অবশ্য তেহরানের ছোড়া প্রায় দু’শ ক্ষেপণাস্ত্রে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কেমন, তা স্পষ্ট নয়। কারণ এ নিয়ে তেল আবিব ও তেহরান পরস্পরবিরোধী তথ্য দিয়েছে। হামলার জবাবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, তেহরানকে এ ভুলের চড়া মূল্য দিতে হবে। এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘটনার পরপরই ইসরাইলের প্রতি ওয়াশিংটনের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে, রাশিয়া এ ঘটনার জন্য মার্কিন নীতির ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছে। আর চীন অবিলম্বে লেবাননে আগ্রাসন বন্ধে ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। অপরদিকে জরুরি বৈঠক করেছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ।

বলা বাহুল্য, মধ্যপ্রাচ্যের এ সংঘাতে গোটা বিশ্ববাসীই উদ্বিগ্ন। এমনিতেও যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন এবং ইউরোপের কতিপয় দেশের যুদ্ধংদেহী মনোভাব দেশগুলোর পারস্পরিক সম্পর্কে ফাটল ধরিয়েছে, যার প্রভাব পড়ছে উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোতেও। যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার বৈশ্বিক পরিবেশকেও করে তুলছে দুর্বিষহ। খাদ্য, জ্বালানি তেল, গ্যাস ইত্যাদির চাহিদা ও সরবরাহ ব্যবস্থায় শুরু হয়েছে টানাপোড়েন। ফলে পরিস্থিতি এরই মধ্যে উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। হতাশার বিষয় হচ্ছে, মানবাধিকার নিয়ে উচ্চকণ্ঠ যে দেশগুলো, তাদের উদাসীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্রও স্পষ্ট। সাম্প্রতিক লেবাননে তো বটেই, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনে নারী-শিশু-কিশোর-বৃদ্ধ নির্বিশেষে এ পর্যন্ত ৪১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হলেও তা বন্ধে বিশ্ব নেতৃত্বের কার্যকর ভূমিকা দৃশ্যমান নয়। জাতিসংঘের তথ্যানুসারে, গেল বছরের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ফিলিস্তিনের ৮০ শতাংশ স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। সব মিলিয়ে এক কঠিন মানবেতর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের। বিশ্ব বিবেকের এ নীরবতার ফলে সংঘাতের মোড় ক্রমেই ঘুরছে, সংকট নতুন মাত্রা পাচ্ছে, যার পরিণতিতে সভ্যতা এখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পড়েছে হুমকির মুখে।

গাজা ও লেবাননে ইসরাইলের আগ্রাসী মনোভাবের শুরুতেই জাতিসংঘের সক্রিয় ভূমিকা পালনের প্রয়োজন ছিল, সে সুযোগও ছিল। ১৯৫০ সালে পাশ হওয়া ‘ইউনাইটিং ফর পিস রেজুলেশনে’ বলা আছে : নিজেদের মধ্যে মতভেদের কারণে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য যদি বিশ্ব শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এগিয়ে আসতে পারে। পরিস্থিতি যেদিকে মোড় নিচ্ছে, তাতে বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতে জাতিসংঘের কার্যকর ভূমিকা রাখার এখনই সময়।

ভুলে গেলে চলবে না, ইরান-ইসরাইল বিশ্বের সামরিক শক্তিধর দেশের তালিকায় শীর্ষ ২০-এ অবস্থান করছে। তাদের সমর্থনে যেসব শক্তিধর দেশ রয়েছে, সামরিক শক্তিতে তাদের অবস্থানও তালিকার উপরেই। কাজেই পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায়, সেজন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ব নেতৃত্বকে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর ভূমিকা পালনে এগিয়ে আসতে হবে। যুদ্ধ ধ্বংস ছাড়া কিছু দিতে পারে না। আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। চাই হিংসা-বিদ্বেষহীন, উদ্বেগহীন, বৈষম্যহীন, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত শান্তিময় বিশ্ব। সংঘাত বন্ধে বিশ্ব নেতৃত্ব অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।

 

 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102