শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন

ক্লেদাক্ত প্রতিযোগিতা বিএনপি-জামায়াতের

bornomalanews
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৩৭ Time View

একটা দেশের সবকিছু ধ্বংস করে, লুটে নিয়ে, পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ চালিয়েও শেষরক্ষা হয়নি ফ্যাসিবাদের। মারণাস্ত্রের মুখে বুক চিতিয়ে দাঁড়ানো নিরস্ত্র মানুষের মহাগণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারিয়ে পালাতে বাধ্য হলেও ওরা কি হাল ছেড়েছে? মোটেও না।

হাসিনার পতিত ফ্যাসিবাদ তাদের হারানো স্বর্গ ফিরে পেতে একের পর এক বুনে চলেছে ষড়যন্ত্রের জাল। তাদের আশা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের৷ যেখানেই মাদক মিলছে সেখানেই তারা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে উসকানি দিচ্ছে। সবখানে ঘাপটি মেরে বসে আছে পতিত ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগীরা।

একটি মাস না যেতেই ওরা চক্রান্তের ঘেরাটোপে বসে ‘এই স্বাধীনতাই কি চেয়েছিলাম আমরা’ বলে অহর্নিশ ফেরি করে চলেছে হতাশা। পুনরত্থানকামী ফ্যাসিবাদী শক্তির হাতে আছে দেশলুটের অজস্র অর্থ-সম্পদ। আছে অবৈধ অস্ত্র। আছে আধিপত্যবাদের মদত। কাজেই সহসা থামবে না ওদের কার্যক্রম। ওরা চাইবে এদেশ যেন একদিনও স্বস্তিতে থাকতে না পারে।

এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দরকার নিপীড়িত জাতির সীসাঢালা ঐক্য। দরকার ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থানকামী প্রতিবিপ্লব ও চক্রান্ত রুখে দেওয়া।

দরকার রাষ্ট্রীয় সংস্কার, জাতীয় পুনর্গঠন ও গণতন্ত্রায়ণের সম্মিলিত প্রয়াস। দরকার দ্রুত স্বস্তি, শান্তি ও স্থিতি ফিরিয়ে মানুষের মধ্যে পুনরায় আস্থার সঞ্চার করা। কিন্তু এখন কী করছে আমাদের দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো?

এখনো আমরা তাদেরকে দেশের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তির ও দলের সংকীর্ণ স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে দেখছি। দখলদারি, দলীয়করণ ও বস্তুগত সম্পদ আহরণের উদগ্র লালসায় তারা এই ক্রান্তিকালেই ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছে। শৃঙ্খলা, সংযম, দায়িত্বশীলতা ও শুদ্ধির কোনো লক্ষ্মণ তাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না।

বিএনপি ও জামায়াত দুটি পৃথক দল। রাজনৈতিক কৌশলের স্বার্থে দীর্ঘদিন তারা জোটবদ্ধ ছিল। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তারা নিজ নিজ অবস্থানে থেকে আলাদা ভাবে রাজনৈতিক ও দলীয় কর্মসূচি চালাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তাতেই তাদের শত্রু হয়ে যাবার কথা নয়। তারা পরস্পরের প্রতিপক্ষও নয়। এমনকি ভবিষ্যৎ নির্বাচনে বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতার প্রত্যাশী হলেও জামায়াত এই মুহূর্তে রাষ্ট্রক্ষমতার প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাদের উভয় দলের রাজনীতির  এখনকার প্রধান প্রতিপক্ষ থাকার কথা পুনরুত্থানকামী পতিত ফ্যাসিবাদের।

কিন্তু সে-কথা ভুলে এবং আওয়ামী বাকশালকে ছেড়ে বিএনপি ও জামায়াত নেমে পড়েছে পরস্পরের বিরুদ্ধে ক্লেদাক্ত প্রতিযোগিতায়। এত চরম ক্ষয়ক্ষতির পরেও তাদের শিক্ষা হয়নি। সময়ের দাবি মেটাতে রাজনীতি ও দলের যে সংস্কার ও প্রস্তুতি দরকার সে-কথাও তারা ভুলে বসে আছে। এটা চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা, হঠকারিতা ও বালখিল্যতা ছাড়া কিছু নয়। দুই দলের এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি  ও শক্তিক্ষয়ে আওয়ামী বাকশালীরা ছাড়া আর কেউই লাভবান হচ্ছে না। আমাদের রাজনীতি আর কবে সাবালক ও দায়িত্বশীল হবে জানি না।

লেখক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খানে ফেসবুক থেকে নেওয়া।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102