সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪৬ পূর্বাহ্ন

আবারও ঋণখেলাপির শঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র: অর্থনীতিতে সংকটের আশঙ্কা

bornomalanews
  • Update Time : রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ২২ Time View

 

ওয়াশিংটন, শনিবার:
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র আবারও ঋণখেলাপির দ্বারপ্রান্তে। দেশটির অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন আইনপ্রণেতাদের সতর্ক করে বলেছেন, ঋণখেলাপি ঠেকাতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে ১৪ জানুয়ারির মধ্যে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে। গত শুক্রবার কংগ্রেস সদস্যদের উদ্দেশে লেখা এক চিঠিতে এই সতর্কতা দিয়েছেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চিঠিতে ইয়েলেন আহ্বান জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ঋণদাতাদের আস্থা ও দেশের আর্থিক মর্যাদা বজায় রাখতে কংগ্রেসকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইয়েলেন জানান, আগামী ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ ৫৪ বিলিয়ন বা ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার কমতে পারে। এর মধ্যে কিছু সিকিউরিটিসের সুদ পরিশোধ করা হবে, যা বাজারে লেনদেন হয় না। এই সিকিউরিটিস ফেডারেল ট্রাস্ট ফান্ড ও মেডিকেয়ার তহবিলের অধীনে ছিল।

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৪ থেকে ২৩ জানুয়ারির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণসীমা নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে। তখন ঋণখেলাপি ঠেকাতে অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে।

ঋণসীমা নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সংকট

গত দুই বছর ধরে জাতীয় ঋণ নিয়ে চাপের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩ সালে বাজেট সংকট এড়াতে কংগ্রেস ঋণসীমা স্থগিত করার চুক্তি করেছিল। এতে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঋণসীমা স্থগিত রাখা হয়। তবে এরপর বিষয়টি আবার কংগ্রেসে উত্থাপন করতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজেট ব্যবস্থায় সরকারের ব্যয় প্রায়ই আয়ের চেয়ে বেশি হয়, যার ফলে জাতীয় ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। তবে ঋণসীমা বৃদ্ধির বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কিছু আইনপ্রণেতা ঋণসীমা বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহী নন, যা এই সংকট আরও জটিল করে তুলছে।

ঋণসীমার ইতিহাস

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম জাতীয় ঋণসীমা নির্ধারিত হয় ১৯৩৯ সালে, যা ছিল ৪৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর থেকে এই ঋণসীমা ১০৩ বার বাড়াতে হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ অনুমোদিত সীমার ৯৮ শতাংশে পৌঁছে যায়। অথচ ২০০১ সালে এই হার ছিল মাত্র ৩২ শতাংশ।

অর্থনীতিতে গুরুতর সংকটের শঙ্কা

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যদি ঋণখেলাপি হয়ে যায়, তবে বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ঋণসীমা বৃদ্ধি না হলে সরকারি কর্মচারীদের বেতন, চিকিৎসা খাত, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অন্যান্য সরকারি কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।

ইয়েলেন তার চিঠিতে কংগ্রেসকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সংকট সৃষ্টি হলে তা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলবে।”

এখন কংগ্রেস কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করে, তা নিয়ে পুরো বিশ্বের নজর যুক্তরাষ্ট্রের দিকে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2024 bornomalanews24.com
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102