ক্রিকেট বিশ্বে এক যুগের অবসান, এক কিংবদন্তির বিদায়—স্টিভেন স্মিথ, যিনি তার অসাধারণ নেতৃত্ব এবং ব্যাটিংয়ে বিশ্বকে মুগ্ধ করেছেন, এখন ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছেন। সেই স্মিথ, যিনি ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্ব দেন, সেই স্মিথই আবার ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি আর ওয়ানডে ক্রিকেট খেলবেন না। তবে তার টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার থাকবে অক্ষুণ্ন—এটা তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে পরাজয়ের পর, স্মিথ তার সতীর্থদের সামনে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত জানান। যেন এক মূর্চ্ছনার মতো, তিনি ঘোষণা দেন যে, এই মুহূর্তেই ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চলেছেন। তবে এটি ছিল এক সিদ্ধান্ত, যেটি ছিল স্বীকৃতি, সম্মান এবং অবিশ্বাস্য প্রতিযোগিতার পরিপূর্ণতা। স্মিথ, যে ১৭০টি ওয়ানডে ম্যাচে ৫৮০০ রান করেছেন, ৪৩.২৮ গড়ে ১২টি সেঞ্চুরি এবং ৩৫টি হাফ সেঞ্চুরি সহ, অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল এবং স্থায়ী খেলোয়াড়দের একজন, তিনি এই মাঠ ছেড়ে যাচ্ছেন।
২০১০ সালে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছিল লেগ-স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে। এরপর, তার ক্রিকেট জীবন ছিল যেন এক অদম্য গতিতে চলা রোলারকোস্টার—যতই সময় গিয়েছে, ততই তার ক্যারিয়ারের উচ্চতা বেড়েছে। ৩৪.৬৭ গড়ে ২৮টি উইকেট নিয়েছেন তিনি, আর তার নেতৃত্বে ২০১৫ এবং ২০২৩ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ জয়ী দল গঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে, তিনি অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, এবং প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছেন।
অথচ, তিনি যে শুধু ক্রিকেটে সফল, তা নয়—২০১৫ এবং ২০২১ সালে তিনি অস্ট্রেলিয়ান পুরুষ ওয়ানডে প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার নির্বাচিত হন এবং ২০১৫ সালে আইসিসি পুরুষ ওয়ানডে টিম অফ দ্য ইয়ার-এর সদস্য নির্বাচিত হন। এসব অর্জন যেন তার ক্যারিয়ারের শীর্ষ স্থানেই ছিল।
তবে সবকিছু ঠিকঠাক রেখে, স্মিথ অবসর নেওয়ার সময় তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, “এটি ছিল এক অসাধারণ যাত্রা, এবং আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি।” তার চোখে এখন দুটি বিশ্বকাপ জেতার স্মৃতি—যা ছিল তার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এবং তারপরেও, তার মনোযোগ এখন ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের দিকে। তিনি জানিয়েছেন, “এটি সরে যাওয়ার সঠিক সময়, কারণ এখন প্রস্তুতির সুযোগ রয়েছে।”