জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি: শহর-গ্রামে বেড়েছে দ্রব্যমূল্যের চাপ! দীর্ঘ সময় পর জুন মাসে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা স্বস্তি এনে দিলেও জুলাইয়ে তা আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, জুলাই মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৮.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে, যা জুন মাসের ৮.৪৮ শতাংশের তুলনায় ০.০৭ শতাংশ বেশি। খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় খাতে এবং শহর ও গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির এই বৃদ্ধি লক্ষণীয়। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ৭.৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা জুনের ৭.৩৯ শতাংশ থেকে কিছুটা বেশি। একইভাবে, খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি জুনের ৯.৩৭ শতাংশ থেকে বেড়ে জুলাইয়ে ৯.৩৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধি শহর ও গ্রাম উভয় এলাকাতেই প্রভাব ফেলেছে। গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি জুনের ৮.৪৬ শতাংশ থেকে বেড়ে জুলাইয়ে ৮.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর মধ্যে গ্রামে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ৭.১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭.৩৬ শতাংশ হয়েছে। শহরাঞ্চলেও একই চিত্র, যেখানে মূল্যস্ফীতি জুনের ৮.৯৪ শতাংশ থেকে বেড়ে জুলাইয়ে ৮.৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। শহরে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি ৭.৯৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮.০৬ শতাংশ এবং খাদ্যবহির্ভূত খাতে ৯.৫৩ শতাংশ থেকে ৯.৫৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এই মূল্যস্ফীতির হারের প্রভাব সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ে স্পষ্ট। বিবিএসের হিসাবে, ২০২৪ সালে যে পণ্য ও সেবা কিনতে ১০০ টাকা খরচ হতো, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে তা কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১০৮ টাকা ৫৫ পয়সা। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ টাকার কেনাকাটায় অতিরিক্ত ৮ টাকা ৫৫ পয়সা ব্যয় হচ্ছে। এই বাড়তি ব্যয় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে, বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধির কারণে। মূল্যস্ফীতির এই ঊর্ধ্বগতি অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। বিশেষ করে খাদ্য খাতে দ্রব্যমূল্যের বৃদ্ধি নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নতি, উৎপাদন খরচ নিয়ন্ত্রণ এবং বাজার নজরদারির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। তবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।