মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন, যা স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন ও পলায়নের প্রথম বর্ষপূর্তির দিনকে স্মরণ করে। এই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের ইতিহাস, জনগণের সংগ্রাম এবং ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘকাল ধরে স্বাধীনতা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে আসছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর, বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের অবক্ষয় এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে। এতে বলা হয়েছে, গত ষোল বছরে শেখ হাসিনার সরকার ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করেছে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। জনগণের মধ্যে বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন এবং সরকারি চাকরিতে বৈষম্য সৃষ্টি করে এক চরম অসন্তোষের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রে জনগণের দাবি অনুযায়ী অবৈধ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এতে জনগণের সুশাসন, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কারের অভিপ্রায় ব্যক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, ঘোষণাপত্রে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের জাতীয় বীর হিসেবে ঘোষণা এবং আন্দোলনকারী ছাত্রজনতার জন্য আইনি সুরক্ষা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। এই ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের জনগণের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আগামী দিনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে গণঅভ্যুত্থানে বিজয়ী জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হিসেবে এই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে, যা দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য একটি মাইলফলক হতে পারে।