অফিসে কাজের ফাঁকে বা ক্লাসে বসে হঠাৎ চোখ ভারী হয়ে আসা অনেকেরই চেনা অভিজ্ঞতা। অনেক সময় ধরে নেওয়া হয় এটি শুধুই রাতের ঘুম কম হওয়ার ফল। কিন্তু গবেষণা বলছে, শুধু ঘুম নয়, আমাদের খাবারের ধরন ও জীবনধারাও দিনের বেলায় অস্বাভাবিক ঝিমুনির বড় কারণ। অনিয়মিত ঘুম, শরীরচর্চার অভাব আর দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা শরীরকে ক্লান্ত করে তোলে। তার সঙ্গে যুক্ত হয় অনুপযুক্ত খাবার—অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, মিষ্টি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট রক্তে শর্করার ওঠানামা বাড়ায়, ফলে শরীরের শক্তি দ্রুত ক্ষয় হয় এবং চোখ ভারী হয়ে আসে। পর্যাপ্ত পানি না খেলেও শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে যায়, যা ক্লান্তি ও অলসতা ডেকে আনে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, দিনের খাবারের ধরনও অনেক সময় ঘুম আনতে পারে। ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার হজমে বেশি সময় নেয়, আচার বা নোনতা খাবার শরীরকে পানিশূন্য করে। আবার ট্রিপটোফ্যানযুক্ত কিছু খাবার যেমন ওটস, বাদাম, টোফু, কলা কিংবা অ্যাভোকাডো রাতে ভালো ঘুমের সহায়ক হলেও দিনের বেলা খেলে উল্টো ঘুমের প্রবণতা বাড়ায়। এই অভ্যাস শুধু কাজের মনোযোগই নষ্ট করে না, বরং দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, স্থূলতা এমনকি অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি পর্যন্ত বাড়াতে পারে। তাই সমাধান হিসেবে জীবনধারায় আনতে হবে সচেতন পরিবর্তন। সুষম খাদ্য গ্রহণ, ভাজাপোড়া ও মিষ্টি কমানো, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং প্রতিদিন অল্প হলেও শরীরচর্চা করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বাদাম, ফল বা দইয়ের মতো স্মার্ট স্ন্যাকস দিনের ক্লান্তি কাটাতে কার্যকর। আর নিয়মিত ৭–৮ ঘণ্টা রাতের ঘুম নিশ্চিত করাও জরুরি। দিনের বেলা ঝিমুনি আসা আপাতদৃষ্টিতে ছোট সমস্যা মনে হলেও এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাই খাবার ও জীবনধারায় সামান্য সচেতনতা আপনাকে রাখবে সতেজ, মনোযোগী এবং দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ।