দেশের বিভিন্ন এলাকায় এক সপ্তাহের অধিক সময় ধরে যানবাহন ও স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ এবং ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত চার দিনে প্রায় ৩২টি যানবাহন ও প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানো হয়েছে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে অস্বস্তি ও ভীতি তৈরি করেছে। যানবাহনে চলাচল, কর্মস্থল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করতে ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী তল্লাশি বাড়িয়ে জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আসন্ন রায়ের প্রেক্ষিতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলার রায় ঘোষণা আগামী সোমবার নির্ধারিত। এই রায়ের প্রেক্ষিতে রাজধানীতে সন্ত্রাস ও সহিংসতার আশঙ্কা বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে রাজধানী ও বিভিন্ন জেলায় বাসে অগ্নিসংযোগ, বোমা হামলা ও নাশকতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় আওয়ামী লীগ সম্পর্কিত কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও রেলস্টেশনে হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উদ্বেগজনকভাবে প্রভাবিত করছে। রাজধানীর বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অঘোষিত ছুটি, স্কুলবাস বন্ধ ও অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে পড়েছে। পরিবহন ব্যবস্থা ভাঙন ধরেছে, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধের কারণে যাতায়াত ব্যাহত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ, গাছের গুঁড়ি ফেলা এবং যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা চলমান রয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে এবং অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে। রাজনৈতিক মহল থেকে নানা ধরনের অভিযোগ ও সমালোচনা জানিয়েও পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। বিএনপি ও অন্যান্য দল সরকারের প্রতি প্রস্তুতির আহ্বান জানালেও, জামায়াতসহ কিছু দল বর্তমান সরকারের পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ এনে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষ রায়ের দিনগুলোকে সামনে রেখে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত, কারণ সম্ভাব্য অরাজকতা ও সহিংসতা দেশের স্থিতিশীলতা ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম জোরদার রাখা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি দেশের নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার জন্য ক্রমাগত মনোযোগ ও সতর্কতার প্রয়োজনীয়তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে। জনগণের মৌলিক জীবনযাত্রা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান রয়েছে।