বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় প্রবেশ করেন তিনি। এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে তাকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে নেতাকর্মীদের উল্লাসের মধ্যে তিনি গুলশানের উদ্দেশে রওনা হন। খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তার প্রত্যাবর্তনকে গণতন্ত্রের সংকটপূর্ণ সময়ে ঘটেছে বলে উল্লেখ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার দেশে উপস্থিতি তার দল বিএনপির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীকী মূল্য বহন করে। একই সঙ্গে, তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে নির্বাসিত রয়েছেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজও খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, তার প্রত্যাবর্তন আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে। এবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার শাসনামলে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দল নির্বাচন বয়কট করেছিল এবং ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলেছিল। অনেকেই খালেদা জিয়ার দেশে ফেরাকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ফেরার একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার খবরকে গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে তিনি দেশে ফিরেছেন। বিমানবন্দর এলাকায় নেতাকর্মীদের ঢল নামে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে। তারা তার সুস্থতা ও দেশে ফেরার জন্য স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এবং আশা করছেন যে তিনি আবারও বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবেন। লন্ডনে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার সময় খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে নিয়ে আসেন হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। প্রবাসী নেতাকর্মীরা তাকে বিদায় জানাতে হাজির হন এবং স্লোগান দিয়ে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানান। এদিকে, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা তার উপস্থিতিকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন। তারা বলছেন, তার প্রত্যাবর্তন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষ করে যখন বাংলাদেশ একটি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে শাসিত হচ্ছে। সার্বিকভাবে, খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার ঘটনা বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যা আগামী দিনের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে।