ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময়ের প্রস্তাবকে “শেষ সতর্কবার্তা” হিসেবে অভিহিত করার পর আলোচনার টেবিলে বসার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস। রবিবার এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, সব বন্দির মুক্তি নিয়ে তারা অবিলম্বে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে এর জন্য রয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত—গাজায় যুদ্ধ বন্ধের স্পষ্ট ঘোষণা, ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং গাজা পরিচালনার জন্য একটি স্বাধীন প্যালেস্টাইনি কমিটি গঠন। হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তারা এমন যেকোনো পদক্ষেপকে স্বাগত জানায় যা ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে চলমান আগ্রাসন বন্ধে সহায়ক। পাশাপাশি তারা মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগে রয়েছে, যাতে একটি বিস্তৃত চুক্তিতে পৌঁছানো যায় যা তাদের দাবিগুলো পূরণ করবে। এদিকে নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটনে ফেরার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি আশাবাদী যে হামাসের সঙ্গে একটি বন্দি বিনিময় চুক্তি শীঘ্রই সম্পন্ন হতে পারে। “আমরা এমন একটি সমাধানের জন্য কাজ করছি যা খুব ভালো হতে পারে,”— বলেন ট্রাম্প। তিনি আরও জানান, যদিও কিছু বন্দি ইতিমধ্যেই মারা গেছে, তবু তার লক্ষ্য হলো সবাইকে ফিরিয়ে আনা। এর আগে ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ লেখেন, ইসরায়েল তার দেওয়া শর্তগুলো মেনে নিয়েছে, এখন পালা হামাসের। তিনি বলেন, “আমি হামাসকে সতর্ক করেছি, শর্ত না মানলে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এটি আমার শেষ সতর্কবার্তা।” হামাসকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “সবাইকে এখনই মুক্তি দাও, তা হলে ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। নয়তো পরিস্থিতি আরও ভয়ংকর হবে।” ইসরায়েলের এন১২ নিউজের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই হামাস অবশিষ্ট ৪৮ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে। এর বিনিময়ে ইসরায়েল মুক্তি দেবে হাজার হাজার প্যালেস্টাইনি বন্দিকে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই চলবে বৃহত্তর শান্তি আলোচনার প্রক্রিয়া। ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকার প্রস্তাবটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে, তবে বিস্তারিত কিছু জানাননি। এই প্রস্তাব ও প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতের সমাপ্তির সম্ভাবনায় নতুন আশার সঞ্চার করেছে। এখন নজর থাকবে পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে, যা হয়তো দীর্ঘদিনের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে পারে।