জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যখন ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, ঠিক তখনই হাইকোর্টে এই নির্বাচন স্থগিত চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করা হয়। তবে রিটের কারণ ও শুনানির বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়েছে। রিটার্নিং অফিসার এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “নিরাপত্তা ঝুঁকি এড়াতে আমরা সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছি।” ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ৯ বার জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯৩ সালের ২৯ জুলাই। ওই নির্বাচনের পর এক ছাত্র বহিষ্কারকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের সংঘর্ষ বাধে, যার ফলে জাকসু ও হল সংসদ বাতিল করে প্রশাসন। এরপর থেকে আর কোনো নির্বাচন হয়নি। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। এতে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বামপন্থী সংগঠনসহ বিভিন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় সক্রিয় থাকা শিক্ষার্থীরাও এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর আগে ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্ট। তবে সেদিনই আপিল বিভাগে আবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, এবং পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। ফলে পূর্বনির্ধারিত ৯ সেপ্টেম্বরেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। জাকসু নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে একদিকে রয়েছে উৎসাহ, অন্যদিকে অনিশ্চয়তার ছায়া। এখন দেখার বিষয়, আদালতের সিদ্ধান্ত কী হয় এবং তা নির্বাচনের ভবিষ্যৎকে কোন পথে নিয়ে যায়।