আমাদের শরীর যে খাবারগুলো গ্রহণ করে সেগুলো ভাঙার সময় ইউরিক এসিড তৈরি হয়। শরীরে ইউরিক এসিড বেশি থাকলে তা জয়েন্টগুলোতে বাসা বাঁধতেপারে এবং সব ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। ইউরিক এসিডের মাত্রা ৩.৫ থেকে ৭.২ এমজি/ডিএলের মধ্যে হওয়া উচিত। যদি এর থেকে বেড়ে যায়, তবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার জরুরি।আজকের প্রতিবেদনে জানাব ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবেন। ইউরিক এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘরে তৈরি কিছু পানীয় পান করতে পারেন। চলুন, জেনে নেওয়া যাক এ ক্ষেত্রে কোন পানীয়গুলো উপকারী।
লেবুপানি
প্রতিদিন সকালে লেবুপানি পান করতে পারেন।এটি ইউরিক এসিড কমাতে সাহায্য করতে পারে। লেবুতে থাকা উচ্চ ভিটামিন ‘সি’ শরীরকে ভাঙতে সাহায্য করে এবং অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের করে দেয়। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে অর্ধেক লেবু ছেঁকে নিন এবং পান করুন।
গ্রিন ডিটক্স ড্রিংক
পালং শাক, শসা, আদা ও লেবুর রসের মিশ্রণে এই পানীয় তৈরি করা যায়।এই ড্রিংক অনন্য ডিটক্সিফাইং বৈশিষ্ট্যে ভরপুর। পালং শাক ক্লোরোফিল সমৃদ্ধ। এটি একটি যৌগ, যা বিষাক্ত পদার্থকে আবদ্ধ করে এবং শরীর থেকে নির্মূল করে পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। শসা হাইড্রেটিং করে এবং প্রস্রাবের মাধ্যমে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। অন্যদিকে আদা হজমে সাহায্য করে এবং প্রদাহ কমায়।
লেবুর রস একটি রিফ্রেশিং জিং যোগ করে এবং এর উচ্চ ভিটামিন ‘সি’ কন্টেন্টে লিভারের ডিটক্সিফিকেশনে কাজ করে। এই সবুজ ডিটক্স পানীয় পুষ্টির একটি পাওয়ার হাউস, যা পেট পরিষ্কার, হজমের উন্নতি ও সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাহায্য করে।
জার্নাল অব অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ফুড কেমিস্ট্রিতে প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, এই পানীয়ের উপাদানগুলো প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। এটি শরীরের প্রাকৃতিক ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াগুলোকে সাহায্য করে। এতে আপনার দৈনন্দিন রুটিনে একটি চমৎকার পরিবর্তন আসবে।
হলুদ দুধ
হলুদ মেশানো দুধ খেলে শুধু আরামই মেলে না, সেই সঙ্গে এটি প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করতে এবং ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে কাজ করে। হলুদে পাওয়া জাদুকরী যৌগ কারকিউমিন অত্যন্ত কার্যকরী একটি উপাদান। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস হালকা গরম দুধে এক চিমটি হলুদ দিয়ে নাড়ুন এবং পান করুন। উপকারিতা নিজেই টের পাবেন।
শসার রস
শসা মানেই শীতলতা ও সতেজতা। শসায় থাকে ৯০% পানি। এটি ইউরিক এসিডসহ টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এতে পিউরিনের পরিমাণ খুব কম, যার মানে এটি সমস্যা বাড়াবে না। অল্প পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে গরমের দিনে এটি উপভোগ করুন।
আদা চা
এটি এমন লোকদের জন্য যারা আদা চায়ের উষ্ণতা পছন্দ করেন। আদা শুধু মসলাদার স্বাদই যোগ করে না, সেই সঙ্গে এটি প্রদাহবিরোধী উপকারিতায়ও পূর্ণ। এটি ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। আদার কয়েকটি টুকরা পানিতে সেদ্ধ করুন এবং চা তৈরি করতে একটু মধু যোগ করুন। এটি জয়েন্টগুলোর জন্য বিস্ময়কর কাজ করে।