চোট কাটিয়ে আগেভাগে ফিরলেও আলো ছড়াতে পারলেন না কিলিয়ান এমবাপে। ভিনিসিউস কিংবা এন্দ্রিক, তারাও পারলেন না দলকে পথ দেখাতে। বিবর্ণ পারফরম্যান্সে লিলের মাঠ থেকে হারের হতাশা নিয়ে ফিরল রেয়াল মাদ্রিদ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লিগ পর্বে বুধবার রাতে ১-০ গোলে জিতেছে লিল। তাদের জয়ের নায়ক জোনাথন ডেভিড, প্রথমার্ধে পেনাল্টি থেকে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেন তিনি।
যেকোনো প্রতিযোগিতায় প্রথমবার মুখোমুখি হলো এই দুই দল, এবং প্রথম দেখাতেই ইউরোপের সফলতম ক্লাবটির বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক জয় তুলে নিল লিল।
২০২৩ সালের মে মাসের পর এই প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স লিগে হারের তেতো স্বাদ পেল প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা।
সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে রেয়ালের ৩৬ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রায়ও ছেদ পড়ল।
শেষের কয়েক মিনিট ছাড়া রেয়ালের পারফরম্যান্স ছিল সাদামাটা। বিশেষ করে আক্রমণে তাদের চেনা গতির দেখা মেলেনি কখনোই। তারকায় ভরা দলটির কেউই তাদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
প্রথমার্ধে গোল করতে না পারার দুর্ভাবনা তো ছিলই, এবার পুরো ম্যাচেই জালের দেখা পেল না রেয়াল। চলতি মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১০ ম্যাচ পর প্রথম কোনো লড়াইয়ে গোল করতে পারল না তারা।
প্রথম ২০ মিনিটে ভালো দুটি সুযোগ অবশ্য পেয়েছিল শিরোপাধারীরা; ভিনিসিউস জুনিয়রের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক লুকাস, আর একক নৈপুণ্যে বল পায়ে বক্সে ঢুকে তার বরাবর শট নেন এন্দ্রিক।
এদিন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে কম বয়সে রেয়ালের শুরুর একাদশের খেলোয়াড় হওয়ার কীর্তি গড়েন এন্দ্রিক (১৮ বছর ৭৩ দিন)। তিনি ভেঙে দেন স্প্যানিশ ক্লাবটির কিংবদন্তি ফরোয়ার্ড রাউল গনসালেসের রেকর্ড। ১৯৯৫ সালের সেপ্টেম্বরে ডাচ ক্লাব আয়াক্সের বিপক্ষে ১৮ বছর ৭৮ দিন বয়সে নেমে আগের রেকর্ড গড়েছিলেন এই স্প্যানিয়ার্ড।
২৫তম মিনিটে গোল খেতে বসেছিল সফরকারীরা। বেঁচে যায় আন্দ্রি লুনিনের ডাবল সেভে। জোনাথন ডেভিডের প্রথম শট ঝাঁপিয়ে ফেরানোর পর আলগা বলে তার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা কোনোমতে আটকান ইউক্রেইনের গোলরক্ষক।
বিরতির ঠিক আগে আর জাল অক্ষত রাখতে পারেনি রেয়াল। বক্সে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার হাতে বল লাগলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কানাডার ফরোয়ার্ড ডেভিডের নিখুঁত স্পট কিকে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
আক্রমণে ধার বাড়াতে ৬১তম মিনিটে ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের জায়গায় চোট কাটিয়ে ফেরা এমবাপে এবং এন্দ্রিককে তুলে লুকা মদ্রিচকে নামান রেয়াল কোচ। কিন্তু কেউই পারেননি নিজেকে মেলে ধরতে।
মরিয়া হয়ে শেষ দিকে প্রবল চাপ দেয় রেয়াল। ৮৫তম মিনিটে গোল করার সবচেয়ে কাছাকাছি যায় তারা; তবে জুড বেলিংহ্যামের প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফেরান এক ডিফেন্ডার। পরের মিনিটে আন্টোনিও রুডিগারের হেড গোলরক্ষক ফেরানোর পর আলগা বল কাছ থেকে উড়িয়ে মারেন ভিনিসিউস।
নতুন ফরম্যাটের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এই অপ্রত্যাশিত হার রেয়ালকে বড় সমস্যায় ফেলে দিতে পারে। অন্যদের জয় এবং নিজেদের ব্যর্থতায় পয়েন্ট টেবিলে আরও পিছিয়ে গেছে তারা, দুই রাউন্ড শেষে ৩ পয়েন্ট নিয়ে আছে ১৭ নম্বরে।
সমান পয়েন্ট নিয়ে তাদের পরেই উঠে এসেছে লিল।