বুকের মাঝ বরাবর জ্বালাপোড়া অনুভূতির ‘হার্টবার্ন’ বা বুক জ্বালাপোড়া হিসেবে পরিচিতি।
একে চিকিৎস বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়- ‘গ্যাস্ট্রোএসোফেজাল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিইআরডি)’। যা কিনা ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ হিসেবে বেশি পরিচিত।
এই বিষয়ে ‘হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, পাকস্থলী থেকে অ্যাসিড চুইয়ে ওপরের দিকে উঠে কণ্ঠনালী পর্যন্ত চলে যায়।
বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভোগেননি এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর ঘন ঘন এই অবস্থা তৈরি হলে সমাধানের জন্য নিচের বিষয়গুলো অনুসরণ করা যেতে পারে।
কিছুক্ষণ পরপর অল্প অল্প খাওয়া: খাদ্যনালী ও পাকস্থলীর মাঝের ‘ভাল্ব’য়ের মতো একটা পেশি থাকে যা পাকস্থলীর অ্যাসিড খাদ্যনালীতে আসতে বাধা দেয়। বেশি খেলে পাকস্থলীতে চাপ পড়ে। ফলে ওই ‘ভাল্ব’ দেয অ্যাসিড চুইয়ে খাদ্যনালীতে চলে যায়। একারণে একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প খাওয়া উপকারী।
ধীরে সুস্থে খাওয়া: তাড়াতাড়ি খেলে পেটে খাবার যায় বেশি। ফলে পাকস্থলীতে চাপও পড়ে বেশি।
রাতে দেরিতে খাওয়া এড়ানো: ঘুম বা শোয়ার সময়ের তিন ঘণ্টার মধ্যে খেলে ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’য়ের সমস্যা বাড়ে, ফলে বুক জ্বালাপোড়া দেখা দেয়।
খাওয়ার পরপরই ব্যায়াম না করা: খাওয়ার পর হজম হওয়ার জন্য সময় দিতে হয়। এজন্য খাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ব্যায়াম করতে হবে।
দেহ একটু উঁচু করে শোয়া: বালিশ দিয়ে দেহটা কোমড় থেকে একটু উঁচু করে শুইলে রাতে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমে আসবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে পেট বা পিঠের নিচেই যেন উঁচু হয়ে না থাকে। ধর থেকে কোমর পর্যন্ত ঢালু একটা আকার হতে হবে।
সমস্যা বাড়ানোর খাবার চিহ্নিত করা: কিছু খাবার ও পানীয় ‘অ্যাসিড রিফ্লাক্স’ ও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা বাড়ায়। নিজের ক্ষেত্রে কোন ধরনের খাবার এই সমস্যা তৈরি করছে সেটা চিহ্নিত করে, খাওয়া বাদ দিতে হবে।
অ্যাসিডিটি’র সমস্যা তৈরি করে এমন সাধারণ কিছু খাবারের মধ্যে আছে- চর্বিযুক্ত খাবার, ঝাল মসলাদার খাবার, টমেটো, আদা, দুধ, কফি, চা, কোলা, পেপারমিন্ট বা পুদিনা এবং চকলেট।
খাওয়ার পর চুইংগাম চাবানো: চুইংগাম চাবালে লালার নিঃসরণ ঘটে। যা অ্যাসিড প্রশমিত করে, খাদ্যনালীতে আরাম দেয়, আর অ্যাসিড পাকস্থলীতে ফেরাতে সাহায্য করে। তবে পেপারমেন্ট স্বাদের চুইংগাম এড়াতে হবে, যা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়।
ওষুধ পরখ করা: কোনো ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন পড়লে সেটার বিষয় ডাক্তার বা ওষুদের দোকানে জিজ্ঞেস করুন, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে গ্যাস বা অ্যাসিডিটির সমস্যা হবে কিনা।
ওজন কমানো: দেহের বাড়তি ওজনের জন্যেও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা হতে পারে। কারণ পেটের চর্বি পাকস্থলীতে চাপ তৈরি করে।